মানুষ এখন বলতে পারবে মিল্কিওয়ের কোথায় প্রাণ থাকার সম্ভবনা বেশী।
দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা বলে আসছেন যে মানুষ তারার ধুলা থেকে তৈরি। মিল্কিওয়ের প্রায় ১৫০,০০ নক্ষত্রের উপর গবেষণার পর একথা সত্য প্রমাণিত হল। মানুষের শরীর আর মিল্কিওয়ে যেসব মৌলিক পদার্থ দিয়ে তৈরি তার মাঝে মিল প্রায় ৯৭%। এসব মৌলিক পদার্থ মিল্কিওয়ের কেন্দ্রের দিকে বেশী পাওয়া যায়।
![]() |
শিল্পী'র চোখে মিল্কিওয়ে। |
জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক পদার্থগুলিকে বলা হয় Building blocks of life। এসব মৌলিক পদার্থকে একত্রে সংক্ষেপে বলে CHONPS। এর মানে হল কার্বন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ফসফরাস ও সালফার। প্রথমবারের মত বিজ্ঞানীরা মিল্কিওয়েতে এসব মৌলের প্রাচুর্যতার ম্যাপ তৈরি করেছেন। এটা করা হয়েছে স্পেক্ট্রোস্কোপির সাহায্য নিয়ে। প্রতিটি মৌল একটি নির্দিষ্ট ওয়েভলেন্থের আলো বিকিরণ করে। ঐ নির্দিষ্ট মৌলটি যদি কোন তারায় থাকে তবে ঐ তারার আলোতে ঐ ওয়েভলেন্থের বিকিরণ ধরা পড়বে।
বিজ্ঞানীরা এই মাপজোখের জন্য স্লোন ডিজিটাল স্কাই সার্ভে (SDSS)'র এপাচি পয়েন্ট অবজারভেটরী গ্যালাকটিক এভোলিউশন এক্সপেরিমেন্ট (APOGEE) স্পেকট্রোগ্রাফ ব্যাবহার করেন। APOGEE মিল্কিওয়ের ধুলির মেঘ ভেদ করে দেখতে পায়, কারণ এটিতে ইনফ্রারেড ওয়েভলেন্থ ব্যাবহার করা হয়। "এই যন্ত্রটি ইনফ্রারেড ওয়েভলেন্থের আলো সংগ্রহ করে এবং প্রসারিত করে। ঠিক যেমনটা প্রিজমে হয়। এতে ঐ আলোর স্পেক্ট্রাম বেরিয়ে পড়ে, যা থেকে বোঝা যায় আলোর উৎসটি কি দিয়ে তৈরি।" বলেন স্লোন'র একজন প্রতিনিধি।
যদিও মানুষ ও তারার মৌলিক পদার্থের মাঝে মিল আছে, কিন্তু মানুষের শরীরে মৌলগুলি যতটুকু পরিমানে আছে, তারাগুলিতে সে অনুপাতে নেই। যেমন ভর অনুসারে মানুষের শরীরের প্রায় ৬৫% হল অক্সিজেন, কিন্তু অসংখ্য তারা আছে যেখানে অক্সিজেনের পরিমাণ ঐ তারার ভরের মাত্র ১%। এই অনুপাত মিল্কিওয়ের বিভিন্ন জায়গাতে বিভিন্ন। যেমন আমাদের সূর্য মিল্কিওয়ের একটি স্পাইরাল আরমের বাইরের দিকে অবস্থান করছে।মিল্কিওয়ের এই এলাকায় জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজন এমন ভারী মৌলিক পদার্থ কম পরিমানে আছে। যেমন অক্সিজেনের পরিমাণ মিল্কিওয়ের কেন্দ্রে দিকে বেশী।
![]() |
সৌজন্যেঃ APOGEE - SDSS |
"এটা মানব জাতির জন্য অনেক বড় মাইলফলক যে তারা তাদের গ্যালাক্সিতে জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক পদার্থের প্রাচুর্যতার ম্যাপ তৈরি করতে পেরেছে।" বলেন জেনিফার জনসন, যিনি SDSS-III APOGEE'র এই গবেষণা দলের প্রধান এবং ওহিও স্টেট ইউনিভারসিটি'র একজন প্রফেসর। "এটা আমদের জানতে সাহায্য করবে মিল্কিওয়ের কোথায় প্রাণ থাকার সম্ভবনা বেশী।"
সম্পূর্ণ ডেটা এইখানেঃ http://www.sdss.org/
সম্পূর্ণ ডেটা এইখানেঃ http://www.sdss.org/
No comments