Header Ads

  • সর্বশেষ

    চাঁদের ভেতরটা কি কি দিয়ে তৈরি?

    চাঁদ ক্রাস্ট, ম্যান্টল ও কোর এই তিনটি আলাদা করা যায় এমন স্তরের সমন্বয়ে গঠিত। ধরা হয় এই স্তর গুলি আলাদা হয়েছিল চাঁদ সৃষ্টির পরপরই তৈরি হওয়া ম্যাগমা মহাসাগরের ফ্র্যাকশনাল ক্রিস্টালাইজেশনের ফলে। বাইরের স্তর গলে যাবার জন্য যে পরিমাণ শক্তির দরকার ছিল তা এসেছিল পৃথিবী-চাঁদ সিস্টেম তৈরি হবার সময় যে প্রস্তাবিত সংঘর্ষ হয়েছিল তা থেকে। জিওকেমিক্যাল ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে দেখা গেছে চাঁদের মাটি মূলত এন্থ্রোসাইটিক কম্পোজিশনের যা ম্যাগমা মহাসাগরের  মতবাদকে সমর্থন করে। যদি আমরা কি কি মৌলিক পদার্থ আছে তা খুঁজতে যাই তবে চাঁদের ক্রাস্ট মূলত অক্সিজেন, সিলিকন, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, ক্যালসিয়াম ও এলুমিনিয়ামের তৈরি। কিছু প্রয়োজনীয় কিন্তু কম পরিমানে টাইটানিয়াম, ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম, পটাশিয়াম ও হাইড্রোজেনও আছে। চাঁদের ক্রাস্ট গড়ে প্রায় ৫০ কিমি পুরু। চাঁদের গড় ঘনত্ব প্রতি কিউবিক মিটারে ৩,৩৪৬.৪ কেজি।

    চাঁদের ম্যান্টলে আংশিক উষ্ণতার কারণে চাঁদের পৃষ্ঠে কিছু ব্যাসল্টিক লাভার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই সব ব্যাসল্ট পরীক্ষা করে জানা গেছে চাঁদের ম্যান্টল মূলত অলিভাইন,অরথোপাইরক্সইন ও ক্লাইনোপাইরোক্সইন নামের খনিজ পদার্থের তৈরি, যার অর্থ হল পৃথিবীর চেয়ে চাঁদের মাটিতে লোহার পরিমাণ বেশী আছে। চাঁদের কিছু ব্যাসল্টে প্রচুর পরিমানে টাইটানিয়ামও পাওয়া গেছে ইল্মেনাইট খনিজ হিসেবে।
    চাঁদে মাঝে মাঝে চন্দ্রকম্পও হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এর উৎপত্তিস্থল পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০০০ কিমি গভীরে হয়। এই চন্দ্রকম্প প্রতিমাসেই নিয়মমাফিক হয়। ধারণা করা হয় এর কারণ চাঁদ ও পৃথিবীর কক্ষপথের বক্রতা। কিছু কম গভীরতার চন্দ্রকম্প যেমন উৎপত্তিস্থল পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০০ কিমি’র কাছাকাছি। কিন্তু এগুলি এতটাই কম ঘটে যে এর কারণ জানা যায়নি এবং চাঁদের কক্ষপথের ধরণের সাথে র কোনও সম্পর্ক নেই।
    অনেক সুত্র থেকে প্রমাণিত হয় যে চাঁদের কেন্দ্র যেটাকে “লুনার কোর” বলে সেটা ছোট। ব্যাসার্ধ মাত্র প্রায় ৩৫০ কিমি বা তারও কম। যা চাঁদের সম্পূর্ণ আকারের মাত্র শতকরা ২০ ভাগ। লুনার কোর কি কি দিয়ে তৈরি তা এখনও পুরোপুরিভাবে জানা সম্ভব হয়, তবে বিজ্ঞানীদের ধারণা এটি আসলে ধাতব লোহা যাতে কিছুটা সালফার ও নিকেল মিশ্রিত আছে। লুনার কোর আংশিক গলিত।
    ২০১০ সালে পুরোনো এপোলো থেকে নেয়া গভীর চন্দ্রকম্পের ডেটা নিয়ে আরও পর্যালোচনা করা হয়। এতে প্রমাণিত হয় যে লুনার কোর লোহা দিয়ে তৈরি এবং এর ব্যাসার্ধ ৩১০ থেকে ৩৫০ কিমি’র মাঝামাঝি। লুনার কোরের ১০ থেকে ২০% হল গলিত। ম্যান্টলের নিচের দিকে শেষ প্রায় ৫০০ কিমি গলিত। এ থেকে বোঝা যায় লুনার কোরের প্রায় ৪০% কঠিনে পরিণত হয়েছে। গলিত বাইরের দিকের কোরের ঘনত্ব প্রতি কিউবিক সেন্টিমিটারে ৫ গ্রাম। সেখানে ভর অনুসারে শতকরা ৬ ভাগ সালফার আছে। কোরের তাপমাত্রা প্রায় ১৬০০ থেকে ১৭০০ কেলভিন।

    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad