Header Ads

  • সর্বশেষ

    বিশাল একটি শূন্য এলাকা মিল্কিওয়েকে দ্য গ্রেট এট্রাকটরের দিকে প্রতিনিয়ত ঠেলে দিচ্ছে।

    আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সী এখন প্রতি ঘন্টায় প্রায় দুই মিলিয়ন কিলোমিটার বেগে ছুটছে। কিন্তু কিসের দিকে? জায়গাটির নাম দ্য গ্রেট এট্রাকটর। আর দ্য গ্রেট এট্রাকটরকেও নিজের দিকে টানছে আরেকটি জায়গা, শার্পলি সুপারক্লাস্টার। কিন্তু এই রহস্যময় দানব ছাড়াও আরেকটি ব্যাপার আছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা গ্যালাক্সিগুলির বাইরে একটি বিশাল খালি জায়গা সনাক্ত করতে পেরেছেন। এর নাম ডাইপোল রিপেলার, যেটা সব কিছুকে শার্পলি সুপারক্লাস্টারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। 

    আমাদের পৃথিবী থেকে মহাকাশের কোন জায়গাতে এসব আকর্ষক অবস্থান করছে তা দেখতে পাওয়া খুবই দুরহ কাজ। সৌরজগৎ মিল্কিওয়ের বাইরের দিকের বাহুর একটিতে অবস্থান করছে। এই অবস্থান যেদিকে শার্পলি সুপারক্লাস্টার আছে তার উল্টোদিকে। তার মানে আমরা যদি পৃথিবী থেকে শার্পলি সুপারক্লাস্টারকে দেখতে চাই তবে মিল্কিওয়ের অসংখ্য তারা এবং গ্যাসের মেঘ ভেদ করে দেখতে হবে। গত বছর এই কাজটিই করা হয়, যার ফলে মহাকাশের ঐ অংশে আরও ৮০০'রও বেশী নতুন গ্যালাক্সী আবিষ্কার হয়।  
    শার্পলি সুপারক্লাস্টার প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এর ঘনত্ব খুবই বেশী এবং প্রতি মুহূর্তে অনেক ভর নিজের দিকে টানছে। এর মাঝে আছে সম্পূর্ণ লেনিয়াকিয়া সুপারক্লাস্টার যাতে মিল্কিওয়ে অবস্থান করছে। কিন্তু সবকিছু টেনে নেয়াটা সমীকরনের একটি দিক মাত্র। বিজ্ঞানীরা এর আগেই প্রস্তাব করেছিলেন যে একটি কম ঘনত্বের জায়গা থাকতে পারে যেখান থেকে পদার্থ একই সাথে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এরকম কোন জায়গা আছে বলে প্রমাণিত হলেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। 
    লেনিয়াকিয়া।
    যেহেতু জায়গাটি খুঁজে পাওয়া যায়নি এখনও তাই সংগৃহীত তথ্যাবলী নিয়ে হিব্রু ইউনিভার্সিটি অব জেরুসালেম ও একই সাথে ইউনাইটেড স্টেটস এবং ফ্রান্সের বিজ্ঞানীরা মিলে "গ্যালাক্সী ফ্লো ফিল্ড" বলে সম্পূর্ণ বিষয়টার একটা 3D ম্যাপ তৈরি করেছেন। এতে মহাকাশে পদার্থগুলি কোন দিকে চলমান তা দেখানো হয়েছে। এই ম্যাপ তৈরির জন্য হাবল টেলিস্কোপের সাহায্য ঐ সব গ্যালাক্সীর তথ্য নেয়া হয়েছে যাদের গতিপথ গাণিতিকভাবে অদ্ভুত। কারণ অনেক গ্যালাক্সীই আছে যেগুলি মহাকাশ যে গতিতে প্রসারিত হচ্ছে তার চেয়ে বেশী গতিতে ছুটছে। এই ম্যাপে একটি ডার্ক ম্যাটারের ঘনত্ব কম এরকম একটি জায়গা দেখানো হয়েছে যা পদার্থকে বিকর্ষণ করে। সেই সাথে আরও একটি জায়গা দেখানো হয়েছে যা পদার্থকে আকর্ষণ করে। যে জায়গাটি বিকর্ষণ করছে তার নাম ডাইপোল রিপেলার, একটি বিশাল জায়গা যেখানে প্রায় কোন গ্যালাক্সীই নেই। এই জায়গাটিই আমাদের লোকাল গ্যালাকটিক গ্রুপকে বিকর্ষণ করে শার্পলি সুপারক্লাস্টারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

    "এই 3D-ম্যাপিং এর আমরা জানতে পেরেছি যে আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সী আবিষ্কার হয়নি এরকম একটি এলাকা থেকে প্রতিনিয়ত দূরে সরে যাচ্ছে।" বলেন গবেষকদের প্রধান ইয়েহুদা হফম্যান। "যেহেতু এটা আকর্ষণ না করে বিকর্ষণ করে তাই এই এলাকার নাম দেয়া হয়েছে ডাইপোল রিপেলার। সেই সাথে শার্পলি সুপারক্লাস্টারের দিকে আকর্ষিত হওয়া মানে আমরা ডাইপোল রিপেলার দিয়ে শার্পলি সুপারক্লাস্টারের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। তাই এটা প্রমাণিত যে টেনে নেয়া ও ঠেলে দেয়া খুবই সার্বজনীন প্রক্রিয়া।" 
    কিন্তু ডাইপোল রিপেলার সম্পূর্ণ শূন্য নয়, কিন্তু এখানে গ্যালাক্সীর সংখ্যা খুবই কম। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন অদূর ভবিষ্যতে এসব গ্যালাক্সিগুলি অপটিক্যাল, নিয়ার-ইনফ্রারেড ও রেডিও ওয়েভলেন্থের সাহায্যে সম্পূর্ণভাবে গবেষণা করা সম্ভব হবে।
    গবেষণাটি নেচার এস্ট্রনমি জার্নালের প্রকাশিত হয়েছে।

    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad