স্পেস হোটেল যেমন হতে পারে।
যদি আমরা মহাকাশে অভিযানের
ব্যাপারে আলোকপাত করি তবে আমরা জানি যে লো আর্থ অরবিটে মানুষের আনাগোনা অবশ্যই
বেড়ে যাবে। এগুলোর মাঝে শুধু ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের উন্নত ভার্শনই
থাকবেনা, বাণিজ্যিকভাবে বসবাসের জায়গাসহ আরও অনেক সুবিধাই থাকবে। স্পেস টুরিজম তো
আছেই, সাথে সৌরজগতের অন্যান্য জায়গা যেমন চাঁদে যাওয়া আসা, মঙ্গল এবং তার চেয়েও
দূরে অভিযান চালানোও এখনকার চেয়ে অনেক সহজ হবে।
ঠিক এই ব্যাপারটাই মাথায় রেখে
ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির একদল পিএইচডি ছাত্র-ছাত্রীর দল
মহাকাশযাত্রীদের থাকার জায়গা ডিজাইন করেছে। এর নাম ম্যারিনা (MARINA), সম্পূর্ণ মানে হল ম্যানেজড, রিকনফিগারেবল, ইন স্পেস নোডাল এসেম্বলী। এই
মডিউলটি একটি বেসরকারী মালিকানায় থাকা স্পেস স্টেশন হিসেবে কাজ করবে। এটা হবে একটি
বিলাসবহুল হোটেলের মত যেখানে মহাকাশে বেড়াতে যাওয়া নভোচারীরা সময় কাটাতে পারবেন।
RASC-AL একটি এমআইটি’র
বছরজুড়ে চলা পিএইচডি লেভেলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রতিযোগিতা। যা এলাবোরেট করলে
হয় রেভোলিউশনারী এরোস্পেস সিস্টেমস কনসেপ্ট – একাডেমিক লিংকেজ ডিজাইন কম্পিটিশন
ফোরাম। এটি নাসা আয়োজন করে। এই প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীরা পৃথিবীর লোয়ার অরবিটে
ব্যাবহারযোগ্য একটি বাণিজ্যিক মডিউল বানানোর জন্য নিজেদের ডিজাইন প্রদর্শন করে যা
ভবিষ্যতে মঙ্গলে যাবার সময় ট্রানজিট ভেহিকল হিসেবেও কাজ করবে। “ম্যারিনা” এই
প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান দখল করে।
২০০২ সাল থেকে এই প্রতিযোগিতা
চলছে। এর উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণ
করিয়ে নাসার ভবিষ্যতের অভিযানগুলির জন্যে নতুন নতুন আইডিয়া খুঁজে বের করা। এই
বছরের প্রতিযোগিতায় একটি সিসলুনার স্পেসে চালানো যেতে পারে এমন একটি মানুষ বহনকারী
মহাকাশযান বানাতে বলা হয়। সিসলুনার স্পেস মানে হল চাঁদ ও তার থেকে দূরের স্পেস। এই
মহাকাশযান প্রস্তাবিত ২০৩০ সালে মঙ্গলের অভিযানেও সাহায্য করবে। খুবই নির্দিষ্ট
করে বললে মানুষ যাতে মাইক্রোগ্র্যাভিটিতে আরও সাচ্ছন্দে কাজ করতে পারে তার জন্য
নতুন উদ্ভাবন নাসা দেখতে চাচ্ছিল। এগুলোর মাঝে ছিল লাইটওয়েট এক্সারসাইজ স্যুট,
এয়ারলক ডিজাইন, বানিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা যায় এমন লোয়ার আর্থ অরবিট বা মঙ্গলে
বসবাস করা যায় এমন মডিউল, নতুন লজিস্টিক ডেলিভারী সিস্টেম।
বিজয়ী দলের নেতৃত্ব দেন এমআইটি’র
ডিপার্টমেন্ট অব এরোনটিকস এন্ড এস্ট্রোনটিকস এর পিএইচডি স্টুডেন্ট ম্যাথিউ
মোরাগুয়েজ। তিনি একই সাথে স্ট্র্যাটেজিক ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ গ্রুপ (SERG)’এরও সদস্য। তিনি ও তার দল লোয়ার আর্থ অরবিটে ব্যবহার করা যায় এমন একটি
মডিউল বানানোর ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন। তাদের ডিজাইনে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস
স্টেশনে যেসব অসুবিধারর মুখোমুখি হতে হয় সেসব থেকে যাতে মুক্তি পাওয়া যায় সেদিকে
বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। MARINA ও SERG দুটি দলেরই সদস্য জর্জ লরডস বলেন “ ঠিক ম্যারিনা ইয়টের মত, MARINA তেও দৈনন্দিন জীবনের জন্য দরকার সকল সুবিধাদি থাকবে। যার মাঝে আছে নিরাপদ
হারবার, নির্ভরযোগ্য শক্তি, পরিস্কার পানি ও বাতাস, সেই সাথে দক্ষ ব্যাবস্থাপনা।“ প্রতিযোগিতার
লক্ষ্য পূরণের জন্য দলটি MARINA’র জন্য কিছু নতুন প্রযুক্তির
সমন্বয় ঘটিয়েছে। যেমন ইন্টারন্যাশনাল ডকিং সিস্টেম স্ট্যান্ডার্ড (IDSS), মডিউলার আর্কিটেকচার এবং এসব মডিউল চালানোর জন্য একটি সাব-সিস্টেম ফাংশন।
No comments