শনির পরিচিতি।
শনি দূরত্ব অনুসারে সূর্যের ষষ্ঠ গ্রহ এবং সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম। আকার অনুসারে বৃহস্পতির পরেই এর অবস্থান। এটা একটি গ্যাস জায়ান্ট যার গড় ব্যাসার্ধ পৃথিবীর ব্যাসার্ধের প্রায় নয়গুন। যদিও এর ঘনত্ব পৃথিবীর আট ভাগের এক ভাগ, আয়তনে বড় হবার কারণে শনি পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ৯৫ গুণ বেশী ভারী। রোমানদের কৃষি দেবতা স্যাটার্নের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়।
শনি |
শনির ভেতরটা মূলত আয়রন-নিকেলের কেন্দ্র আর সিলিকন ও অক্সিজেনের তৈরি পাথর দিয়ে তৈরি। কেন্দ্রটীর উপরে আছে মেটালিক হাইড্রোজেনের স্তর,তার উপরে আছে একটি তরল হাইড্রোজেন ও তরল হিলিয়ামের স্তর। সেই সাথে সবার জানা উপরের গ্যাসের স্তর যার অন্য নাম ফ্রেঙ্কেল লাইন। শনির বায়ুমন্ডলের উপরিভাগে এমোনিয়ার ক্রিস্টালের উপস্থিতির জন্য এর রং অনেকটা মরা হলুদের রঙের মত। মেটালিক হাইড্রোজেনের যে ইলেক্ট্রিক কারেন্ট, সেটার কারণে শনির ম্যাগনেটিক ফিল্ডের সৃষ্টি। যদিও এটা পৃথিবীর ম্যাগনেটিক ফিল্ডের চেয়ে কম শক্তির, কিন্তু শনির বড় আকারের কারণে ম্যাগনেটিক মোমেন্ট প্রায় ৫৮০ গুণ। শনির ম্যাগনেটিক ফিল্ডের শক্তি আবার বৃহস্পতির বার ভাগের এক ভাগ। শনিতে বাতাসের গতি ঘন্টায় ১৮০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে যা বৃহস্পতির চেয়ে বেশী কিন্তু নেপচুনের চেয়ে কম।
শনির খুবই আকর্ষণীয় বলয় বা রিং সিস্টেম আছে। এতে মোট নয়টি পূর্ণ বৃত্তাকার বলয় আর তিনটি অর্ধবৃত্ত বলয় আছে। বলয়গুলির উপাদানের বেশীরভাগই বরফকণা। সাথে কিছু পাথর ও ধুলির মিস্রন আছে।
টাইটান, শনির বৃহত্তম উপগ্রহ। |
সর্বমোট ৬২টি উপগ্রহ শনিকে প্রদক্ষিণ করছে। এদের মাঝে ৫৩টির নামকরণ করা হয়েছে। এছাড়াও একশরও বেশী মুনলেট আছে বলয়গুলির মাঝে মাঝে। মুনলেট উপগ্রহের চেয়ে আকারে অনেক ছোট হয়। টাইটান শনির বৃহত্তম উপগ্রহ। এটি সৌরজগতের দিত্তেয় বৃহত্তম উপগ্রহ। আকারে বুধ গ্রহের চেয়েও বড় টাইটান কিন্তু কম ভারী। টাইটান শনির একমাত্র উপগ্রহ যার স্থায়ী বায়ুমন্ডল আছে।
No comments