নাসা দেখতে চায় ব্ল্যাকহোলের ভেতরে কি আছে।
নিউট্রন স্টার, ব্ল্যাকহোল বা অন্যান্য মহাজাগতীয় বস্তুর ধ্বংসাবশেষ হল মহাবিশ্বের সবচেয়ে আগ্রহের বিষয়। সেই সাথে এগুলো নিয়ে গবেষণা করাও খুবই কষ্টসাধ্য। কিন্তু যখন নাসা'র IXPE মিশন চালু হবে তখন আমরা এগুলোর অন্যরূপ দেখব যা আগে কখনও দেখা যায়নি।
শিল্পীর কল্পনায় ব্ল্যাকহোল। |
তারার ধ্বংসাবশেষ যেমন ব্ল্যাকহোল বা নিউট্রন স্টার পর্যবেক্ষণ করা খুবই কঠিন। কারণ তাদের আকার খুবই ছোট। বেশীরভাগ সময়ই তাদের প্রচন্ড গ্র্যাভিটির কারণে তাদেরকে আবছা করে রাখে তাদের চারপাশে প্রদক্ষিণরত ধুলা ও গ্যাসের মেঘ। তাদের মাপজোখ দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীদের বোকা বানিয়ে আসছে। তাদের তাপমাত্রা মিলিয়ন ডিগ্রী সেলসিয়াসের উপরে। এ কারণে তাদের থেকে উচ্চ শক্তির রেডিয়েশন যেমন এক্স-রে নির্গত হয় প্রতি মুহূর্তে। এই এক্স-রে বিজ্ঞানীদের সামনে তাদেরকে গবেষণার একটা জানালা খুলে রেখেছে, নতুবা তাদেরকে নিয়ে গবেষণা করা অসম্ভব ছিল।
এখন নাসা তাদের ব্ল্যাকহোল ও নিউট্রন স্টার নিয়ে পরবর্তী অভিযানে এসব এক্স-রে নির্গমন নিয়ে আরও বিস্তারিত জানতে চায়। তারা ইমেজিং এক্স-রে পোলারিমেট্রি এক্সপ্লোরার বা IXPE দিয়ে এই গবেষণা চালাবে। এই অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নাসা'র মার্শাল স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের মারটিন অয়েস্কফ। তিনি বলেন "IXPE'র তিনটি টেলিস্কোপ থাকবে যেগুলো নিউট্রন স্টার,পালসার বা ব্ল্যাকহোল থেকে আসা এক্স-রে'র পোলারাইজেশন পরিমাপ করতে পারবে।"
পোলারাইজেশন আলোর একটি ধর্ম যা থেকে বোঝা যায় যে আলো কোন দিকে যাচ্ছে। একই ধর্ম এক্স-রেও দেখায়। প্রচলিত যন্ত্রপাতি দিয়ে এটা ধরা যায়না। পোলারাইজেশন আলোর উৎস সম্পর্কে খুবই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। এর মাঝে আছে উৎসের আকার, ম্যাগনেটিক ফিল্ডের শক্তি এবং কিভাবে উচ্চ শক্তির রেডিয়েশন নির্গত হচ্ছে তার বিস্তারিত। এসব তথ্যের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা অসংখ্য ধাঁধার উত্তর মেলাতে পারবেন বলে আশা করছেন।
নাসা'র সংবাদ সম্মেলন বলা হয় IPXE ২০২০ সাল নাগাদ শুরু হবে। এর মহাকাশযান ও উৎক্ষেপণ পরবর্তী কার্যক্রম এবং তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ বাবদ খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১৮৮ মিলিয়ন ইউএস ডলার। এতে অবাক হবার কিছু নেই।খরচ খুব বেশী হচ্ছেনা। নাসা'র চান্দ্রা এক্স-রে অবজারভেটরী'র শুরু করতে এবং তা চালাতে বাজেট ছিল ১.৬৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার। এছাড়া সেটি উৎক্ষেপণের জন্য আলাদা প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ইউএস ডলার খরচ হয়।
No comments