পৃথিবীর বাইরে প্রাণ খুঁজে পাবার জন্য ইউরোপা ও এনসেলেডাসের দিকে চোখ দেয়া হচ্ছে।
২০১৭ সাল নাগাদ মানুষ বৃহস্পতির চাঁদ ইউরোপা ও শনির চাঁদ এনসেলেডাসে অভিযান চালাতে পারে। হ্যাঁ, মানুষ সেখানে সশরীরে যাবেনা, কিন্তু যা কিছু জানা আছে তার সাহায্য নিয়ে সেখানে জীবন খুঁজতে যন্ত্র পাঠাবে মানুষ। উদ্দেশ্য থাকবে এলিয়েন খোঁজা এবং এ ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা অস্বাভাবিক আশাবাদী। মানুষ অনেক দিন ধরেই ভিন গ্রহে প্রানী খুঁজছে, কিন্তু এখনও কোন ধরণের প্রাণ পৃথিবীর বাইরে থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু কি এমন হবে ২০১৭ সালে যে বিজ্ঞানীরা এতটা আশাবাদী?
শনির চাঁদ এনসেলেডাস (দূরে) এবং ডিয়োন |
যুক্তরাজ্যের ইম্পিরিয়াল কলেজ অব লন্ডনের পদার্থবিদ সাইমন ফস্টার এনসেলেডাস ও ইউরোপায় জীবনের চিহ্ন পাওয়া যাবেই। কিছু ওয়েব সাইট প্রকাশ করে যে মঙ্গল ও বৃহস্পতিতে জীবনের সন্ধান পাওয়া গেছে। ফস্টার এই দাবীটাও সাথে সাথে ভুয়া বলে উড়িয়ে দিলেন। তার মতে নাসার ক্যাসিনি মিশন খুবই সত্তর কিছু অসাধারণ ব্যাপার আবিষ্কার করতে যাচ্ছে। এটা এমন হতে পারে যে শনি ও বৃহস্পতির চাঁদে জীবন পাওয়া গেছে।
এই চাঁদগুলির ব্যাপারে সবার এতটা আশাবাদী হবার কারণ হল তাদের কয়েক কিলোমিটার পুরু বরফের পৃষ্ঠের নীচে বিশাল মহাসাগর পাওয়া গেছে। এই মহাসাগর চাঁদগুলির কেন্দ্র পর্যন্ত বিস্ত্রিত।সেখানে অগ্ন্যুতপাতের মত ঘটনাও ঘটে থাকতে পারে, যেটা জীবন ধারণের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির শুরু।
ইউরোপার পৃষ্ঠ। |
ধরা হয় ইউরোপায় পৃথিবীর চেয়ে বেশী পানি আছে। বড় ব্যাপার হল সেই পানি আবার লবনাক্ত। বিজ্ঞানীরা এটাও মনে করেন যে ইউরোপার কেন্দ্র পৃথিবীর মত লোহার তৈরি। দীর্ঘদিন ধরে ইউরোপার দিক থেকে রহস্যময় রেডিও সিগন্যাল আসছিল।তখন বিজ্ঞানীরা সেটা রহস্যভেদ করতে পারেননি। এটা সবার ভেতর ঢুকিয়ে দেয় যে ইউরোপায় হয়ত কোন ধরণের প্রাণ আছে যারা এই রেডিও সিগন্যাল পাঠাচ্ছে। কিন্তু তার কোন প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। বেশীরভাগ বিজ্ঞানীরা মনে করেন ইউরোপায় প্রাণ থাকলেও সেটা হবে খুবই নিম্নমানের এবং তাদের বসবাস হবে বরফের নীচে থাকা মহাসাগরে।পরে বিজ্ঞানীরা ধরতে পারেন যে রেডিও সিগন্যালগুলো আসছিল সৌরজগতের বাইরে কোন এক নিউট্রন স্টার থেকে। নাসা'র পক্ষ এখনও কোন ধরণের ল্যান্ডার বা রোভার ইউরোপা বা এনসেলেডাসে পাঠানো হয়নি। ইউরোপার সবচেয়ে সাম্প্রতিক ছবি তুলেছিল নাসা'র নিউ হরাইজোন প্রোব। সেটাও ২০১২ সালে।ইউরোপায় নাসা ইউরোপা ক্লিপার মিশন নামে একটি মিশন পরিচালনা করবে বলে ঘোষণা দিলেও সেটা কবে শুরু হবে তার তারিখ এখনও বলা হয়নি। এই মিশনে ইউরোপার খুব কাছে থেকে ৪৫ টি ফ্লাইবাই নেবার পরিকল্পনা আছে। সেই সাথে বরফ ভেদ করতে পারা রাডার, শর্ট-ওয়েভ ইনফ্রারেড স্পেক্ট্রোমিটার, টপোলজিক্যাল ইমেজার এবং আয়ন ও নিউট্রল মাস স্পেট্রোমিটারের মত যন্ত্রপাতিও থাকবে।
অন্যদিকে এনসেলেডাসে নাসা, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি(এসা) এবং জার্মান এরোস্পেস সেন্টার সকলেই মিশন পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এর মাঝে জার্মান এরোস্পেস সেন্টার বলেছে যে তারা ল্যান্ডার নামাবে এনসেলেডাসে। সেই সাথে বহুল প্রতীক্ষিত নাসা ও এসার সম্মিলিত প্রচেস্টার টাইটান স্যাটার্ন সিস্টেম মিশন সম্পূর্ণ ফোকাস দেবে এনসেলেডাসের ওপর, যদিও এটার উৎক্ষেপণের তারিখ ২০২০ সালে মাঝামাঝি পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। কারণ নাসা ইউরোপা জুপিটার সিস্টেম মিশন-লাপ্লাস'কে বেশী গুরুত্ব দিচ্ছিল।
No comments