Header Ads

  • সর্বশেষ

    পৃথিবীর জ্বালানির পরবর্তী উৎস কি তবে শনির চাঁদ টাইটান?

    খুবই নিকট অতীতে মানবজাতি যে সংকটের সম্মুখীন হবে তা হল জ্বালানী সংকট। জীবনযাপন সুবিধাজনক রাখার জন্য খুবই শীঘ্রই যথেষ্ট পরিমান জ্বালানির ব্যবস্থা করতে হবে মানুষকে। এখন আমরা পৃথিবীর যেসব প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভরশীল যেমন প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ তৈল দিন দিন নিঃশেষ হতে চলেছে। যদি এগুলি একবার শেষ হয়ে যায় আমরা এগুলি আর নতুন করে ফিরিয়ে আনতে পারবনা। এসব জ্বালানি আবার পেতে হলে আমাদের আর অন্ততঃ কয়েক হাজার বছর অপেক্ষা করতে হবে যতদিন না এখনকার জীবজন্তু ও গাছপালা মাটিতে পচে পাথরের স্তরে স্তরে এইসব প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ তৈলে পরিণত না হয়। 
    শিল্পীর কল্পনা। 
    ফ্র্যাকিং পদ্ধতিতে মাটির নীচে থেকে এইসব খনিজ তৈল খুবই সফলতার সাথে তুলে আনা হয়। কিন্তু তৈল সংগ্রহের এই পদ্ধতি এক সময় অকেজো হয়ে যাবে। যখন পৃথিবীর প্রাকৃতিক জ্বালানি শেষ হয়ে যাবে তখন শনির চাঁদ টাইটান হয়ে উঠতে পারে এসব সংগ্রহের একটি খুবই ভাল জায়গা। আমরা হয়ত সবাই জানি শনির চাঁদ টাইটানে প্রচুর পরিমাণে মিথেন আছে। পৃথিবীর যেমন বৃষ্টি হয়, নদী, মহাসাগর, হ্রদ ইত্যাদি আছে টাইটানেও এসব আছে। পার্থক্য হল পৃথিবীতে এসবে পানি পাওয়া যায়, টাইটানে এগুলো মিথেনের। এটাও মনে করা হয় যে টাইটানের বায়ুমন্ডল আসলে অপরিশোধিত তৈলের, যাতে সালফার নেই বললেই চলে। এসব কথা শুনলে পৃথিবীর যেকোনো তৈল ব্যবসায়ীর জিভে জল আসতে বাধ্য।

    কিছুদিন আগে ধ্বংস হয়ে যাওয়া গ্রেট ক্যাসিনি প্রোবের সাহায্যে সংগৃহীত তথ্যাবলী থেকে প্রায় নিশ্চিতই হওয়া যায় টাইটানে পৃথিবীর চেয়ে অনেক বেশি জ্বালানি পদার্থ রয়েছে যেগুলি পৃথিবীতে জীবনযাপনের জন্য খুই দরকার। কিছু কিছু বিজ্ঞানী ও ব্যাবসায়ীরা মনে করছেন টাইটান একটি জ্বালানি সংগ্রহের জায়গা হতে পারে যেখানে খনি থেকে জ্বালানি সংগ্রহ করে পৃথিবীতে আনা হবে। ব্যবসায়ীরা এতটাই উৎসাহী যে তাঁরা বলছেন আমরা আশা করছি প্রজাতি হিসেবে আমরা প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ জ্বালানি ব্যবহারের যুগ পেরিয়ে এসেছি। টাইটানে মিশন পরিচালনা করার জন্য খুবই ভালো সময় এখন।

    বর্তমানে পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা খুবই উদ্বিগ্ন ফ্র্যাকিং পদ্ধতিতে খনি তৈল উত্তোলন করাতে। তাদের ধারণা এই পদ্ধতিটি পৃথিবীর ইকোসিস্টেমের জন্য খুবই ক্ষতিকর। যখন আমরা দেখছি যে আমাদের প্রাকৃতিক জ্বালানি দিন দিন ফুরিয়ে যাচ্ছে, তখন নবায়নযোগ্য শক্তি ও ক্লীন এনার্জির খুবই বড় বাজার তৈরি হচ্ছে। কিন্তু একবার যদি আমরা পাথর ভেঙ্গে কিভাবে তৈল তুলতে হয় সে প্রযুক্তি বের করে ফেলতে পারি, তবে ক্লীন এনার্জির প্রজেক্ট হয়ত কিছুদিনের জন্য আটকে যাবে।

    মানবজাতির জন্য পৃথিবীর সর্বশেষ যে জিনিসটি দরকার তা হল যত বিভিন্ন দূষণকারী পদার্থ আছে সেগুলি থেকে পৃথিবীকে মুক্ত করা। গতানুগতিক জ্বালানি উৎসগুলি পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলি পোড়ানোর ফলে কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি হয়। এর প্রভাব তো আমরা অনিয়মিত আবহাওয়া দেখে বুঝতে পারছি। একবার যদি ব্যবসায়ীরা বুঝে যান যদি টাইটান থেকে জ্বালানি সংগ্রহ করে পৃথিবীতে নিয়ে আসা যায় তবে তাঁরা তাদের টাকার লগ্নি কোনও অবস্থাতেই ক্লীন এনার্জি গবেষণার দিকে করবেন না। এতে একসময় আমাদের পৃথিবীর বাতাস এতটাই দূষিত হয়ে যাবে যে আমাদের প্রজাতি হিসেবেই টিকে থাকার সংগ্রামে করতে হবে।

    আমাদের ভাগ্য ভাল যে নবায়নযোগ্য শক্তি ও ক্লীন এনার্জির গবেষণা বেশ দ্রুত গতিতে চলছে। আশা রাখি যখন মানুষ সত্যিই টাইটানে যাবে তখন যেন সেখাকার জ্বালানি সংগ্রহ করার উদ্দেশ্য নিয়ে না যায়, যেন যায় সম্পূর্ণভাবেই গবেষণার উদ্দেশ্য নিয়ে। 


    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad