Header Ads

  • সর্বশেষ

    শুক্রের ব্যাপারে কিছু অসাধারন তথ্য।

    শুক্র দূরত্ব হিসেবে আমাদের সৌরজগতের দ্বিতীয় গ্রহ। একই সাথে পৃথিবীর নিকটতম গ্রহ। পৃথিবী থেকে দূরত্ব প্রায় ৪১,৪০০,০০০ কিলোমিটার। চলুন জেনে নেয়া যাক শুক্র গ্রহ সম্পর্কে বেশ কিছু অবাক করা তথ্য।
    ১। শুক্রের আগ্নেয়গিরি।
    সৌরজগতের অন্যান্য যে কোন জ্যোতিষ্কের চেয়ে শুক্রে আগ্নেয়গিরির সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। শুক্রের পৃষ্ঠে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৬০০ টি আগ্নেয়গিরি শনাক্ত হয়েছে। ধারণা করা হয় ছোট ছোট আরও আগ্নেয়গিরি এখানে আছে যেগুলি এখনও সনাক্ত করা যায়নি। এসব আগ্নেয়গিরির বেশীরভাগই সুপ্ত বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন, শুধুমাত্র অল্প কিছুই সক্রিয় আছে এখনও।
    ২। দিন বছরের চেয়েও বড়।
    শুক্রের এক দিন সমান পৃথিবীর ২৪৩ দিনের সমান। অর্থাৎ শুক্রের নিজের অক্ষের উপর একবার আবর্তিত হতে ২৪৩ দিন সময় লাগে। কিন্তু সূর্যের চারপাশে একবার ঘুরে আসতে সময় লাগে পৃথিবীর ২২৪.৭ দিন, যা শুক্রের দিনের দৈর্ঘ্যের চেয়ে কম।
    ৩। পৃথিবীর জমজ।
    আমাদের সৌরজগতের যতগুলি গ্রহ আছে পৃথিবীর সাথে মিল সবচেয়ে বেশী হল শুক্রের সাথে। কারণ দুটি গ্রহের আকার প্রায় একই সমান সেই সাথে শুক্র যে সব পদার্থ দিয়ে তৈরি, পৃথিবীর গঠনও অনেকটা একই ধরণের। পৃথিবীর কক্ষপথের সবচেয়ে নিকটতম কক্ষপথ শুক্রের। দুটি গ্রহের পৃষ্ঠই তুলনামূলক নতুন এবং দুটি গ্রহেরই খুবই ঘন বায়ুমন্ডল আছে। তবে শুক্রের বায়ুমন্ডলে যে সালফিউরিক এসিড এসিড আছে তার সাথে পৃথিবীর কোনও মিল নেই। 

    ৪। শুক্র অসম্ভব উষ্ণ।
    শুক্রের পরিবেশ কতটা গরম সে তুলনা করলে যা করতে হবে আপনাকে তা হল একটি ওভেনের ভেতরে মাথা ঢুকিয়ে ওভেন চালু করে দিতে হবে। তারপরও হয়ত শুক্রের পরিবেশ কেমন আপনি বুঝতে পারবে না। কারণ এর বায়ুমন্ডলের বেশীরভাগ কার্বন ডাই অক্সাইড দিয়ে তৈরি। তাপমাত্রা ৪৭০ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে শুক্রে।
    ৫। প্রচন্ড চাপ।
    শুক্রের বায়ুচাপ মারাত্মক রকমের বেশী। পৃথিবীর বায়ুচাপের চেয়ে অন্ততঃ ৯০ গুণ বেশী। এই চাপ পৃথিবীর মহাসাগরের প্রায় এক কিলোমিটার নীচে যে চাপ তার সমান।
    ৬। সূর্য অতিক্রমকারী গ্রহ।
    শুক্র হল খুবই বিরল গ্রহের ভেতরে একটি যেটাকে আমরা সূর্যের সামনে দিয়ে পার হতে দেখি। ঘটনাটার নাম হল ট্রানজিট। এই ঘটনা আর শুধুমাত্র বুধের ক্ষেত্রে ঘটে। শুধুমাত্র বুধ ও শুক্র এই দুটি গ্রহই সূর্য থেকে পৃথিবীর চেয়ে কাছাকাছি কক্ষপথে আবর্তন করে।
    ৭। সবচেয়ে উজ্বল গ্রহ।
    শুক্র আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহগুলির ভেতরে পড়ে না, শুধুমাত্র পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানের কারনে এটিকে অনেক উজ্বল দেখায়। চাঁদের পর এটিই আকাশের সবচেয়ে উজ্বল জ্যোতিষ্ক। এটি এতটাই উজ্বল যে ২০১১ সালে এয়ার কানাডার একজন পাইলট এটাকে একটি অন্য প্লেন আসছে বলে ভুল করেছিলেন। পাইলট তার প্লেনকে নিয়ে এমারজেন্সী ডাইভ করেছিলেন মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য। পরে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার সেটাকে শুক্র বলে নিশ্চিত করেন।
     ৮। প্রাচীন রহস্য।
    প্রাচীনকাল থেকেই শুক্র মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। খ্রিষ্টপূর্ব ১৬০০ সাল থেকে প্রাচীন ব্যাবলনীয়রা শুক্রের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করত। গ্রীক গণিতবিদ পীথাগোরাস সর্বপ্রথম প্রমাণ করেন যে সকালের ও সন্ধ্যার সবচেয়ে উজ্বল তারা একই বস্তু, শুক্র গ্রহ।
    ৯। বাতাসের গতি।
    শুক্রের বাতাসের গতি প্রচন্ড বেশী। ঘন্টায় ৪৫০ মাইল যা পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত গতির টর্নেডোর চেয়ে বেশী।
    ১০। প্রায় ২.৯ বিলিয়ন বছর আগে শুক্রের পরিবেশও পৃথিবীর মত ছিল বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন। সেখানে হয়ত প্রাণও ছিল।

    ১১। কিছু কিছু বিজ্ঞানীরা মনে করের কলোনাইজেশনের জন্য মঙ্গলের চেয়ে শুক্র ভাল পছন্দ হতে পারে। শুক্রের পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩১ মাইল উপরে শুক্রের যা গ্র্যাভিটি তা পৃথিবীর গ্র্যাভিটির অনেকটা কাছাকাছি। আর সেই উচ্চতায় বায়ুচাপও পৃথিবীর বায়ুচাপের কাছাকাছি। তাপমাত্রাও শুন্য থেকে ৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর ভেতরে। মঙ্গলের চেয়ে শুক্রের রেডিয়েশনের বিপক্ষে তুলনামূলক ভাল প্রতিরক্ষা আছে। রেডিয়েশনের মাত্রা অনেকটা পৃথিবীর সমান।

    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad