Header Ads

  • সর্বশেষ

    রহস্যের সমাধান। বৃহস্পতির দিক পরিবর্তনকারী জেট স্ট্রীমের জন্য দায়ী গ্র্যাভিটি ওয়েভ।


    বৃহস্পতির জেট স্ট্রীম বা উচ্চ গতি সম্পন্ন বায়ুপ্রবাহের রহস্যময় দিক পরিবর্তনের রহস্যের হয়ত কিনারা করা গেছে। একটি নতুন গবেষণা প্রস্তাব করেছে যে গ্র্যাভিটি ওয়েভের জন্যই এই ঘটনা ঘটছে। ওইসব গবেষকদের মতে এই রহস্য উদ্ঘাটনের মাধ্যমে সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহের বায়ুমণ্ডলে মেঘ কিভাবে কাজ করছে তা তো জানা যাবেই সেই সাথে আমাদের সৌরজগতের বাইরে যে সব গ্রহ আবিষ্কার হয়েছে তাদের মেঘের গঠন ও কাজ সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে। 

    “বৃহস্পতি পৃথিবী থেকে আকারে অনেক বড়, একই সাথে সূর্য থেকে বৃহস্পতির দূরত্বও পৃথিবী থেকে অনেক বেশী। নিজ অক্ষের উপরেও পৃথিবী থেকে অনেক দ্রুত আবর্তিত হয়। পৃথিবী যেসব পদার্থ দিয়ে তৈরি, বৃহস্পতি আলাদা ধরণের পদার্থের তৈরি। কিন্তু নিরক্ষরেখায় কি ঘটতে পারে সেটা গবেষণার জন্য বৃহস্পতি একটি অসাধারন গবেষণাগার।“ বলেন এই গবেষণা দলের প্রধান গবেষক রিক কসেন্টিনো। তিনি গ্রীনবেল্ট, ম্যারিল্যান্ডে নাসা গডারড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের একজন পোস্টডক্টরাল ফেলো। 

    প্রতি প্রায় চার পৃথিবীর বছরে অন্ততঃ একবার বৃহস্পতির নিরক্ষরেখায় যে পূর্ব-পশ্চিম জেট স্ট্রীম চলমান থাকে তা দিক পরিবর্তন করে। এই রহস্যময় ঘটনাকে বলা হয় কোয়াসি-কোয়াড্রেনিয়াল অসিলেশন বা QQO। একই ধরণের ঘটনা পৃথিবী ও শনি গ্রহেও দেখা যায়। পৃথিবীতে এই ঘটনা প্রতি ২৮ মাসে একবার ও শনিতে প্রতি ১৫ পৃথিবীর বছরে একবার ঘটে। 

    প্রথমবারের মত গবেষকেরা এই QQO এর ঘটনাটি নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। গত পাঁচ বছর ধরে তাঁরা হাওয়াইতে নাসার ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ ফ্যাসিলিটি(IRTF) এ এই পর্যবেক্ষণ করে আসছিলেন। ITRF এ একটি যন্ত্র নাম টেক্সাস ক্রস এশেলে স্পেক্ট্রোগ্রাফ দিয়ে এই নতুন গবেষণায় তাঁরা বৃহস্পতির ৪০ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ থেকে ৪০ ডিগ্রী দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করেছেন। “এই যন্ত্র দিয়ে বৃহস্পতির বায়ুমন্ডলের একটি পাতলা আনুভূমিক অংশের পরিমাপ করা হয়।“ বলেন এই গবেষণার অন্যতম গবেষক এমি সাইমন। 

    আগের করা সিমুলেশনের সাথে নতুন করা পরিমাপের তুলনা করে দেখা যায় যে এই QQO ঘটনার চালিকাশক্তি দেয় গ্র্যাভিটি ওয়েভ। গ্র্যাভিটি ওয়েভ বাতাস বা যেকোনো তরলে ঘটতে পারে। সাম্যাবস্থা বজায় রাখার জন্য গ্র্যাভিটি এটা ঘটায়, যেমন বাতাসের কারণে সমুদ্রে সৃষ্টি হওয়া ঢেউ। তবে মহাকাশে যে গ্র্যাভিটি ওয়েভ দেখা যায় সেটা থেকে এই ওয়েভ ভিন্ন প্রকৃতির।

    বৃহস্পতিতে তার বায়ুমন্ডলের নীচের দিকে যে গ্র্যাভিটি ওয়েভ তৈরি হয় সেটাই মূলত QQO ঘটার জন্য দায়ী। 

    সকরো, নিউ মেক্সিকো ইন্সটিটিউট অফ মাইনিং এন্ড টেকনোলজির প্রফেসর ও এই গবেষণার আরেক জন গবেষক রাউল মহালেস-জুবেরিয়াস বলেন “আমাদের মডেল দিয়ে আমাদের সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহ এবং এক্সোপ্ল্যানেট গুলিতেও ঘটতে থাকা QQO এর ব্যাখ্যা দেয়া সম্ভব। পৃথিবী ও বৃহস্পতির মাঝে অনেক পার্থক্য থাকলেও উপরের দিকের বায়ুমন্ডল ও নিচের দিকে বায়ুমন্ডলের কাপ্লিং মেকানিসজম দুটি গ্রহেরই একই ধরণের এবং প্রভাবও একই ধরণের।

    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad