Header Ads

  • সর্বশেষ

    কিছু কিছু এক্সোপ্ল্যানেটে হয়ত প্রয়োজনের চেয়ে বেশী পানি আছে।

    জীবনের প্রয়োজনে সবকিছু থাকা ভাল, কিন্তু কোন নির্দিষ্ট জিনিস খুব বেশী থাকা ভালনা। একই কথা হয়ত বাইরের গ্রহের প্রানীদের জন্যও প্রযোজ্য।

    অগাস্ট, ২০১৬ তে প্রক্সিমা সেন্টুরাই বি আবিষ্কার হবার পর প্রায় পৃথিবীর সমান এ গ্রহটি কেমন তা নিয়ে অসংখ্য জল্পনা কল্পনা হয়েছে। এটাতে কি সত্যিই পৃথিবীর মত পর্বত, মহাসাগর, বিস্তীর্ণ সবুজ বনভূমি বা জীবন ধারণের জন্য একদম উপযুক্ত বায়ুমণ্ডল আছে ? নাকি এটি শুষ্ক মরুভূমির মত যা প্রতিনিয়ত তার তারা রেডিয়েশনে পুড়ছে ? সত্যটা যে কোন দিকে যেতে পারে।



    প্রক্সিমা সেন্টুরাই বি আবিষ্কার হয়েছিল গ্রহটির তারার উপর তার আকর্ষণের প্রভাবের জন্য। এই ছোট পৃথিবীর সমান গ্রহটির গ্র্যাভিটির কারনে তার তারাটি কিছুটা হলেও নড়ত। এখন পর্যন্ত আমারা শুধু গ্রহটির ভর ও কক্ষপথ সম্পর্কে জানি। গ্রহটি শুধু পৃথিবীর ভরের সমানই না, এটি তার তারার বাসযোগ্য এলাকার ভেতরেই প্রদক্ষিণ করে। একটি তারার যে দূরত্বে তাপমাত্রা খুব বেশীও থাকেনা, আবার খুব কমও থাকেনা, যেখানে পানি তরল অবস্থায় প্রবাহিত হতে পারে সেটাই ঐ তারার বাসযোগ্য এলাকা। 

    পৃথিবীতে যেখানেই পানি আছে, সেখানেই জীবন আছে। প্রক্সিমা সেন্টুরাই বি তে যদি পানি থাকে তবে তা তরল হিসেবেই আছে। একারনেই সেখানে যে কোন ধরনের জীবনের খোঁজ পাবার ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা খুবই উৎসুক। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেখানে যে জীবন আছে তার সামান্য কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

    এখন ইউনিভার্সিটি অব বার্ন এর কয়েকজন গবেষক এটা নিয়ে গবেষণা করছেন। তারা গ্রহের উৎপত্তির তত্ত্ব অনুসারে সিদ্ধান্তে আসতে পেরেছেন যে লাল বামন বা রেড ডোয়রফ তারা্র চারিদিকে ছোট পাথুরে গ্রহ প্রদক্ষিণ করতে পারে। শুধু তাই নয় এসব গ্রহতে অনেক বেশী পরিমাণ পানিও থাকতে পারে। "মজার ব্যাপার হল এই সব তারাদের যেসব গ্রহ প্রদক্ষিণ করে তারা ছোট আকারের হয়। সাধারণত পৃথিবীর ব্যাসার্ধের ০.৫ থেকে ১.৫ গুন। আমাদের ধারণা কতখানি সত্য তা পরের আবিষ্কার থেকে আরও পরিস্কার বোঝা যাবে।" বলেন ইউনিভার্সিটি অব বার্ন এর সেন্টার অব স্পেস এন্ড হ্যাবিটাবিলিটি'র আয়ান এলবারট।

    এই গবেষণা থেকে জানা যায় যে এ ধরনের এক্সোপ্ল্যানেটে প্রচুর পানি থাকতে পারে। কম্পিউটার সিমুলেশনে দেখা গেছে এ ধরণের ৯০% গ্রহের সম্পূর্ণ ভরের অন্তত ১০% পানি। যেখানে পৃথিবীর ভরের মাত্র ০.০২% হল পানি।

    প্রথমে মনে হতে পারে যে এই সব রেড ডোয়রফ গুলির গ্রহগুলিতে উন্নত প্রানের উদ্ভব হতেই পারে। কারণ এসব তারা হল মহাকাশের সবচেয়ে প্রাচীন তারা এবং তাদের সম্ভাব্য আয়ু ১৪ বিলিয়ন বছর, যা মহাকাশের বয়সের চেয়েও বেশী। পৃথিবীতে প্রানের উৎপত্তি হয়েছে মাত্র প্রায় ৩ বিলিয়ন বছর আগে যখন সূর্যের বয়স আরও কম ছিল। 

    কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় বেশী পানি থাকা হয়ত এই সব গ্রহের জন্য ভাল নয়। "যদিও পানিকে জীবন ধারণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধরা হয়, তারপরও বেশী পানি থাকা ভাল নয়।" বলেন এই গবেষণার আরেকজন গবেষক উইলি বেনজ। 

    আগে অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে যে পানি অধ্যুষিত গ্রহ গুলিতে অস্থির আবহাওয়া থাকতে পারে যা জটিল জীবন তৈরি হবার জন্য অন্তরায় হতে পারে। এটা যদি আসল ব্যাপার হয়ে থাকে তবে খুবই উন্নত এলিয়েন সভ্যতা বাস্তবে টিকে থাকার সম্ভবনা অত্যন্ত কম। তাছাড়া রেড ডোয়রফ তারাদের গ্রহ গুলি এতটাই কাছে থাকে যে সেখানে রেডিয়েশনের মাত্রা খুবই বেশী থাকার কথা। সেখানে শুধুমাত্র প্রাথমিক জলীয় প্রানী থাকতে পারে কিন্তু তারা থাকবে এই সব রেডিয়েশন থেকে রক্ষাকারী বরফের স্তরের নীচে।

    "বাসযোগ্য হোক আর নাই হোক, এইসব গবেষণা আমদের নতুন নঅতুন ফলাফল দিচ্ছে। যা থেকে আমারা গ্রহ তৈরির ও সেসব গ্রহে বাসযোগ্যতার  ব্যাপারে জ্ঞান আরও সমৃদ্ধ করতে পারছি।" বলেন উইলি বেনজ।

    রেড ডোয়রফ হল মিল্কিওয়ের সবচেয়ে গতানুগতিক তারা। যদি প্রক্সিমা সেন্টুরাইয়ে ব্যাপক পরিমানে পানি সহ পৃথিবীর মত পাথুরে গ্রহ তৈরি হতে পারে তবে সমগ্র মিল্কিওয়েতে এরকম কতগুলি উপযুক্ত পরিমাণ পানি আছে এমন পৃথিবী ২.০ থাকতে পারে? ্সেগুলিতে কি জীবন থাকতে পারে? এই অবস্থায় আমরা শুধু ধারণা করতে পারি।

    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad