বেটেলজুস হয়ত তার সঙ্গী তারাকে গিলে ফেলেছে।
বিশাল লাল তারা বেটেলজুস। কালপুরুষ তারকারাজির যে ধনুকবাজ তার কাঁধে যে তারাটি আছে বলে ধরা হয় সেটাই বেটেলজুস।একটি গবেষণা মতে এটি হয়ত অনেক আগেই তার সঙ্গী তারাটিকে গিলে নিয়েছে।
বেটেলজুস একটি রেড সুপারজায়ান্ট।খুব তাড়াতাড়ি এটির সুপারনোভা বিস্ফোরণ হবে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। বেটেলজুস এতটাই স্ফীত হয়েছে যে মনে হয় তার মরন ঘনিয়ে এসেছে। এটি সূর্যের চেয়ে ১৫-২৫ গুন ভারী।ব্যাস প্রায় ৮৬০ মিলিয়ন মাইল যা আমাদের সূর্যের প্রায় ১০০০ গুন। এটি যদি সূর্যের জায়গায় থাকত তবে তার পৃষ্ঠ মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাজে থাকা এস্টরয়েড বেল্টকেও ছাড়িয়ে যেত। এত বড় তারার নিজ অক্ষের উপর আস্তে ঘোরার কথা কারণ আকার যত বাড়ে ঘূর্ণন গতি তত কমতে থাকে। কিন্তু বেটেলজুসের ক্ষেত্রে তা হয়না, এটি তার নিজ অক্ষের উপর ঘন্টায় প্রায় ৫৩,৯০০ কিমি বেগে পাক খাচ্ছে। "কেন এমন হচ্ছে তা আমদের অজানা।" বলেন ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস, অস্টিনের যে ক্রেইগ হুইলার। এটি যেকোনো তারার স্বাভাবিক ঘূর্ণনের চেয়ে প্রায় ১৫০ গুন জোরে ঘুরছে।" কম্পিউটার মডেল অনুসারে এই অস্বাভাবিক ঘূর্ণনের একটা ব্যাখ্যা দেয়া যায় যদি এমন হয় যে এটি তার সঙ্গী তারাকে প্রায় ১০০০০০ বছর বা এরকম সময়ে তার নিজের দিকে পুরোপুরি টেনে নিয়েছে। তারাটি ভরে ও আকারে আমদের সূর্যের মত ছিল।গিলে নেয়া তারাটির কৌণিক গতি বেটেলজুস পেয়েছে, তাই তার এরকম অস্বাভাবিক ঘূর্ণন গতি।
এই গিলে ফেলার ঘটনায় যে বিস্ফোরণ হবার কথা তাতে ঘণ্টায় প্রায় ৩৬০০০ কিমি বেগে পদার্থ বাইরে ছড়িয়ে পড়ার কথা। বাস্তবে বিজ্ঞানীরা বেটেলজুসের কাছাকাছি জায়গায় এরকম পদার্থের একটা স্তরও পেয়েছেন। এই স্তরের অন্য ব্যাখ্যাও থাকতে পারে।
বেটেলজুস সূর্য থেকে মোটামুটি ৬৪০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। অন্যান্য সুপারজায়ান্ট তারার মত এটিও কম বয়েসে ধ্বংস হবে। প্রায় ১০ মিলিয়ন বছর বয়স হবে বেটেলজুসের। অন্যদিকে এখন সূর্যের বয়স প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন বছর যা তার সম্পূর্ণ জীবনের মধ্যভাগ।
এই নতুন গবেষণাটি গত ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ তে রয়েল এস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির মাসিক সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।
No comments