Header Ads

  • সর্বশেষ

    নেমেসিস তত্ত্ব। সূর্যের শয়তান যমজ।

    নেমেসিস একটি তত্ত্বীয় বামন তারা। সূর্যের সঙ্গী মনে করা হয় তারাটিকে। পৃথিবীতে বিভিন্ন সময় প্রানীদের মহাবিলুপ্তি ঘটেছে। একটি মহাবিলুপ্তি থেকে আরেকটির যে সময়ের ব্যবধান, তা খুবই নিয়মিত। এই ধারাবাহিকতার জন্য নেমেসিসকে দায়ী করা হয়।
    এটি সূর্যের প্রায় ৩০ আলোকবর্ষের মাঝে থাকা আবিষ্কার হওয়া তারার ছবি। বৃত্তের মাঝের তারাগুলি প্রায় ২৬ আলোকবর্ষের মধ্যের। নীল গুলি  WISE এর আবিষ্কার। লাল গুলি WISE এর আগেই আবিষ্কৃত। 
    বিজ্ঞানীরা যে তত্ত্ব দিয়েছেন সে অনুসারে এটি এমন একটা কক্ষপথ বজায় রাখে যা সৌরজগতে বাইরের দিকে থাকা অরট ক্লাউডের গ্রহাণুগুলির কক্ষপথে প্রভাব ফেলে। মাঝে মাঝে তাদের কোন কোন গ্রহাণু পৃথিবীতে প্রানীদের বিপদ ঘটায়। দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা সত্ত্বেও বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত তারাটির কোন হদিস পাননি।    
    ১৯৮০'র শুরুর দিকে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীতে ঘটা বিভিন্ন সময়ের মহাবিলুপ্তির একটি ধাঁচ বুঝতে পারেন।প্রায় প্রতি ২৭ মিলিয়ন বছর পর পর এইসব মহাবিলুপ্তিগুলি ঘটেছে। বিশাল সময়ের ব্যবধানের জন্য বিজ্ঞানীরা এসব মহাবিলুপ্তির মহাজাগতিক ব্যাখ্যা খুঁজছিলেন।
    ১৯৮৪ সালে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া,বারকলির রিচারড মুলার বলেন যে প্রায় ১.৫ আলোকবর্ষ দূরে থাকা একটি লাল বামন তারার এসবের জন্য দায়ী। পরে গবেষণায় দেখা যায় নেমেসিস বাদামি বা সাদা বামন বা বৃহস্পতির মত কম ভরের একটি তারাও হতে পারে। 
    অরট ক্লাউডে অসংখ্য বরফের তৈরি জ্যোতিষ্ক যারা সূর্যকে দীর্ঘ উপবৃত্তাকার পথে প্রদক্ষিণ করে। এদের সাধারণ অবস্থান প্লুটোর কক্ষপথের ওপারে। এসব বরফ খণ্ডের অনেকগুলি তাদের দীর্ঘ উপবৃত্তাকার কক্ষপথে প্রদক্ষিণের এক পর্যায়ে সূর্যের কাছকাছি আসতে থাকে। যখন অনেক কাছে চলে আসে তখন সূর্যের উত্তাপে বরফ গলতে শুরু করে, সেই সাথে জমে থাকা বরফ টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙ্গে যেতে শুরু করে।এই সব টুকরো হওয়া বরফ খন্ড লেজের মত আকৃতির সৃষ্টি করে, যাকে আমরা ধুমকেতু বলে চিনি। কিন্তু নেমেসিস যদি মাত্র ১.৫ আলোকবর্ষ দূরে থাকত তবে মহাবিলুপ্তি আরও ঘন ঘন হত। কারণ নেমেসিসের গ্র্যাভিটি নতুন বেশকিছু ধুমকেতুর তৈরি করত। ফলে পৃথিবীতে বড় বড় উল্কাপাতের ঘটনা আরও অনেক ঘন ঘন ঘটত। 
    বামন গ্রহ সেডনা আবিষ্কার হবার পর বিজ্ঞানীরা আরও বিহ্বল হয়ে পড়েন। সেডনা প্রায় ১২,০০০ বছরে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। নিশ্চয়ই এমন কোন ভারী কিছু আছে যা সেডনাকে এত দীর্ঘ কক্ষপথে ঘুরতে সাহায্য করে। 
    কোন কোন বিজ্ঞানী নেমেসিস তত্ত্ব সমর্থন করেন, আবার অনেকেই করেন না। কারণ পৃথিবীতে উল্কাপাতের কারনে তৈরি ক্রেটার গুলো থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে মহাবিলুপ্তির জন্য দায়ী করা যায় এমন কোন ধাঁচ প্রমাণ হয়নি। নেমেসিসের কক্ষপথ এমন যে সৌরজগতের ভেতরের দিকের কোন গ্রহের কক্ষপথের উপর তার কোন প্রভাব নেই। তার মানে নেমেসিসের দূরত্ব অনেক বেশী। বিজ্ঞানীরা মনে করেন এমন যদি দূরত্ব হয় নেমেসিসের, তবে তার কক্ষপথ খুবই দ্রুত পরিবর্তন হয়। ঐ দূরত্বে থাকলে নেমেসিসের জন্য মিল্কিওয়েকে প্রদক্ষিণের সময় অন্য তারার উপরও প্রভাব পড়ার কথা। কিন্তু এমন কোন উপাত্ত পাওয়া যায়নি এখন পর্যন্ত। 
    সূর্যের সঙ্গীকে খুঁজে পাওয়া হয়ত কঠিন হবে, কিন্তু তাকে অবশ্যই এখনকার স্পর্শকাতর টেলিস্কোপ দিয়ে ডিটেক্ট করা যাবে। এজন্য বিজ্ঞানীরা টু মাইক্রন অল স্কাই সার্ভে (টুমাস) ব্যবহার করেন। এটি গত সাত বছর ধরে কাজ করে চলেছে। এটি তিন ধরনের ইনফ্রারেড ওয়েভলেন্থের আলো নিয়ে কাজ করে। এটি দিয়ে এই সাত বছরে সূর্যের ৩০ আলোকবর্ষ ব্যাসার্ধের ভেতর ১৭৩ টিরও বেশী ব্রাউন ডোয়রফ তারা আবিষ্কার করা হয়েছে। এদের কোনটিই নেমেসিসের মত নয়। ২০১১ সালে  Wide-field Infrared Survey Explorer (WISE) এর সাহায্যে প্রায় ২০ আলোকবর্ষের মাঝে থাকা অনেকগুলি ব্রাউন ডোয়রফ তারা আবিষ্কার করা হয়। 

    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad