Header Ads

  • সর্বশেষ

    সবুজ ধুমকেতু আছে, সবুজ গ্রহানুও আছে, কিন্তু সবুজ নক্ষত্র নেই কেন?

    জ্যোতির্বিদ্যায় সবুজ খুবই আগ্রহের রং। আমাদের চোখ অন্য যে কোন রঙের চেয়ে সবুজ রঙের প্রতি বেশী সংবেদনশীল। রাতের আকাশে সবুজ হরহামেশাই দেখা যায়। সবুজ ধুমকেতু আছে, সবুজ উজ্জ্বল গ্রহাণু দেখা গেছে, উত্তরের অরোরার সবুজ রং দেখে সবাই বিমোহিত হয়, এমনকি সবুজ আভার গ্যালাক্সীও আছে। এসব জ্যোতিষ্কের অন্য রঙও থাকতে পারে তবে রাতের আকাশে সবুজ খুবই প্রচলিত রং। 
    ধুমকেতু লাভজয়, তুলেছেন পল স্টুয়ারট।
    এসব জ্যোতিষ্ক সবুজ রং দেখা গেলেও সব ক্ষেত্রে কিন্তু রঙের উৎপত্তির কারন একই নয়। যেমন ধুমকেতু সূর্যের দিকে এগুতে থাকলে তাতে সবুজ লেজ দেখা যায়। ধুমকেতু লেজ বিভিন্ন গ্যাসের তৈরি। এসব গ্যাসের মাঝে বেশিরভাগটাই হাইড্রোজেন তবে কিছু যৌগও আছে যেমন সায়ানাইড। এসব গ্যাসের অণু সবুজ রঙের তরঙ্গদৈর্ঘ্যে আলোর বিকিরণ করে। এই বিকিরণ এতটাই উজ্জ্বল হয় যে খালি চোখেই দেখা যায়। ১৯১০ সালে হ্যালীর ধুমকেতুতে সায়ানাইড আবিষ্কার হয়। ঐ সময় সবাই ভয় পেত যে ধুমকেতুর লেজের গ্যাসে পৃথিবীর বাতাস দুষিত হয়ে যেতে পারে। হাস্যকর ব্যাপার।
    গ্রহানুর সবুজ হবার কারণ সম্পূর্ণ আলাদা। একটি গ্রহাণু যখন কোন বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করে তখন ঘর্ষণের ফলে বাইরের স্তর বাষ্পে পরিনত হয়। গ্রহানুতে থাকা বিভিন্ন ধাতু এ সময় বিভিন্ন রঙের আলো দেখায়। এক্ষেত্রে সবুজ রঙের কারণ নিকেল ধাতু। বেশীরভাগ গ্রহানু লোহা-নিকেল দিয়ে তৈরি তাই সবুজ রং প্রায়ই দখা যায়। গ্রহানু যদি বেশী বেগে বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করে তবে এই উজ্জ্বলতা আরও বাড়ে। যেমন দ্রুত বেগের লেনোয়েড উল্কাপাত সবুজ রঙের 
    গ্রীন পী গ্যালাক্সীর রং সবুজ। এর কারণ হল অক্সিজেন। অক্সিজেন তারার আলোয় আয়নিত হয়ে সবুজ রং বিকিরণ করে। গ্যালাক্সীর মত একটি বিশাল জ্যোতিষ্ক সবুজ আলোয় আলোকিত হতে প্রচুর পরিমান আয়োনিত অক্সিজেন থাকতে হবে।তার আরও একটা অর্থ হল সেখানে প্রচুর তারা জন্ম হচ্ছে। 
    আমাদের চোখ সবুজ রঙের জন্য সংবেদনশীল হলেও এখন পর্যন্ত সবুজ নক্ষত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি। নক্ষত্র লাল, হলুদ, নীল এমনকি সাদাও হয়, কিন্তু সবুজ নয়। পুরো ব্যাপারটিই নির্ভর করছে নক্ষত্রটির আলো কিভাবে তৈরি হয়, যা একেক নক্ষত্রের একেক রকম।ধুমকেতু, গ্রহাণু বা গ্যালাক্সীতে ঘুরে বেড়ানো মেঘ সকলেই তাদের পরমাণু থেকে বিকিরনের কারণে উজ্জ্বল। এইসব পরমানুর ইলেক্ট্রন নিম্ন শক্তিস্তর থেকে শক্তি পেয়ে উচ্চ শক্তি সম্পন্ন শক্তিস্তরে উন্নীত হত। এসময় নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের শক্তির বিকিরণ হয়। কিন্তু সূর্য ও অন্যান্য তারা তাদের শক্তি পায় অভ্যন্তরীন উত্তাপ থেকে। এতে একটি মাত্র রং বিকিরণ না করে অনেক রংএর সমাহার তৈরি হয় যার নাম থারমাল ব্ল্যাকবডি। নক্ষত্রের উজ্জ্বলতা নির্ভর করে তার তাপমাত্রা উপরে। কম তাপমাত্রার নক্ষত্রের সবচেয়ে উজ্জ্বল রং হল লাল। সবচেয়ে বেশী তাপমাত্রার নক্ষত্র নীল রঙের হয়। কিন্তু যেসব নক্ষত্রের রং সবুজ তাদের লাল ও নীল রঙেও অনেক উজ্জ্বল দেখায়।সেই সব নক্ষত্রে আমারা লাল, সবুজ ও নীল রং দেখি যা আমাদের চোখ সাদা বলে চেনে। 

    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad