Header Ads

  • সর্বশেষ

    বুধ, শুক্র, মঙ্গল ও প্লুটোকে পৃথিবীর মত একই রকম কপি দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হল। কোন পৃথিবীর ভাগ্যে কি ঘটবে?

    বুধ পৃথিবীঃ 
    পৃষ্ঠে পানি তরল থাকার জন্য সূর্য থেকে এই দূরত্ব খুবই কম। খুবই কম সময়ের মাঝে স্পষ্ট করে বলতে গেলে মাত্র কয়েকদিনের ভেতর তাপমাত্রা এতটাই বেড়ে যাবে যে যত উদ্ভিদ ও প্রানী আছে সবই মারা যাবে। পৃষ্ঠের পানি বাষ্পে পরিণত হতে থাকবে। বড় বড় পানির আধার যেমন বড় হ্রদ বা মহাসাগর সম্পূর্ণ পানিহীন হতে অবশ্য সময় লাগবে। এসব জায়গার বিশেষ করে মহাসাগরগুলির একদম গভীরে যেসব জীবের বাস তারা হয়ত সপ্তাহ থেকে মাস খানেক পর্যন্ত বেঁচে থাকার সময় পাবে। ধীরে ধীরে সব পানি বাষ্প হয়ে যাবে এবং জীবন সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। যত পানি বাষ্পে পরিণত হল সেগুলি বাতাসে ভারী মেঘের সৃষ্টি করবে। এতে তাপামাত্রা আরও বেড়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত গ্রীন হাউস এফেক্ট ব্যাপকভাবে শুরু হবে।অর্থাৎ নতুন শুক্র। একসময় তাপমাত্রা এত বেড়ে স্থীর হবে যে তাপমাত্রায় সীসা গলে যায়। খুই বাজে জায়গা।   

    শুক্র পৃথিবীঃ
    পানি যেখানে তরল হিসেবে প্রবাহিত হতে পারে সূর্যের সেই সীমার একদম ভেতরের দিকের প্রান্তে অবস্থান করবে এই শুক্র পৃথিবী। অনেকটা বর্তমান শুক্রের অবস্থার মতই হবে এই শুক্র পৃথিবীর। কিন্তু শুক্রের মত অবস্থা হতে বেশ সময় নেবে। পৃথিবীর দুই মেরুতে যত বরফ আছে সব গলা শুরু করবে।ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা অনেকে বেড়ে যাবে। গড় তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে নিরক্ষীয় অঞ্চলকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলবে। অন্যান্য জায়গার তাপমাত্রাও বেশ বেড়ে যাবে কিন্তু কয়েক বছর বাসযোগ্য থাকবে। মেরু অঞ্চল গুলির তাপমাত্রা বাড়লেও বসবাসের জন্য বেশ আরামদায়ক হয়ে উঠবে। এই অবস্থার আরও অবনতি ঘটবে এবং বায়ুমন্ডলে পানির বাষ্পের পরিমাণ বাড়তেই থাকবে।শুক্র পৃথিবীর বাসিন্দারা হয় গ্রহটি থেকে পালাবার চেষ্টা করবে নয়ত এমন কিছু প্রযুক্তির আবির্ভাব ঘটাবে যাতে ঐ তাপমাত্রায় তারা টিকে থাকতে পারে। যেসব প্রানী অনেক প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে সেগুলো হয়ত একশ থেকে হাজার খানেক বছর টিকে থাকবে। বায়ুমন্ডলে পানির বাষ্পের আংশিক চাপ অনেক বেড়ে যাবে। ভূপৃষ্ঠে কিছু তরল পানির অস্তিত্ব হয়ত থাকবে।বায়ুমন্ডলে পানির বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় সবসময় ঘন মেঘ থাকবে। ফলে বেশিরভাগ সময় সূর্যের আলো মাটিতে আসতে পারবেন। এতে পরিবেশ অন্ধকার থাকবে। আবহাওয়া খুবই গরম ও আর্দ্র থাকবে। সেসব জীবনের অস্তিত্ব তখনও থাকবে যারা ঐ পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর মত সক্ষমতা রাখে।   
    মঙ্গল পৃথিবীঃ
    এতক্ষণ যা পড়ে আসলেন, মঙ্গল পৃথিবীতে তার সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থা থাকবে।পানি যেখানে তরল হিসেবে প্রবাহিত হতে পারে সূর্যের সেই সীমার একদম বাইরের দিকের প্রান্তে অবস্থান করবে এই মঙ্গল পৃথিবী। তার মানে পানির তরল থাকার জন্য জায়গাটা খুবই ঠান্ডা। গড় তাপমাত্রা সাথে সাথে কমতে থাকবে। গ্লেসিয়ার গুলি ক্রমেই নিরক্ষরেখার দিকে অগ্রসর হতে থাকবে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা কমতে শুরু করবে। কিন্তু এসব পরিবর্তনের গতি হবে বেশ কম। পৃথিবীর জীবেরা খাপ খাওয়ানোর বেশ সময় পাবে। কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি থেকে মেরুর দিকের অংশগুলি বসবাসের জন্য সম্পূর্ণ অযোগ্য হয়ে পড়বে প্রচন্ড ঠান্ডার জন্য।সূর্যের আলোর প্রখরতা কমে যাওয়ায় তাপমাত্রা কমে যাবে যার প্রভাব খুব বাজেভাবে পড়বে গাছপালার উপর। খাদ্যশস্য উৎপাদনে সমস্যা হবে ফলে সারা মঙ্গল পৃথিবীতে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। সারা মঙ্গল পৃথিবীকে বরফে পরিণত হওয়া থেকে বাঁচানোর জন্য পরিকল্পনা মাফিক গ্রীন হাউস এফেক্টের ব্যবস্থা করতে হবে। শেষ পর্যন্ত সমস্ত সভ্যতাকে নিরক্ষরেখার দিকে সরে যেতে হবে। মানুষ এবং অন্যান্য প্রানী ও গাছপালা স্থায়ী ভাবেই টিকে যাবে মঙ্গল পৃথিবীতে। 
    প্লুটো পৃথিবীঃ
    প্লুটো পৃথিবী সূর্য থেকে খুবই দূরে থাকবে। কয়েকদিন বা সর্বচ্চো এক সপ্তাহের ভেতরে গড় তাপমাত্রা শূন্যের নীচে চলে যাবে। মেরু অঞ্চল তাড়াতাড়ি জমে যাবে আর নিরক্ষীয় অঞ্চলে হয়ত কয়েকদিন দেরী লাগবে। এক মাসের মধ্যে মহাসাগর বাদে অন্যান্য সব পানির আধার জমে যাবে। একবছরের মধ্যে গড় তাপমাত্রা এন্টার্কটিকার রেকর্ড কম তাপমাত্রারও নীচে চলে যাবে। মাটিতে থাকা জীবের বিলুপ্তি ঘটবে কিন্তু মহাসাগরের গভীরে থাকা প্রানীরা টিকে থাকবে। আসলে মহাসাগরের যেসব জায়গাতে হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট আছে সেসব জায়গা কখনও জমে যাবেনা। মানুষ যদি জমে যাওয়ার আগে মাটির নীচে কলোনী বানাতে পারে তবে হয়ত কিছুদিন বেঁচে থাকতে পারবে, কিন্তু সময় হয়ত তাদের সাথে থাকবেনা। মাত্র কয়েক বছরের ভেতর বায়ুমন্ডলের সমস্ত গ্যাস কঠিন পদার্থে পরিণত হয়ে স্তরে স্তরে মাটিতে জমা হবে। প্লুটো পৃথিবী পরিণত হবে ভুতের গ্রহে।  
    আমরা অনেক খুশি যে পৃথিবী পৃথিবীতে আছি। 

    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad