সেরেস'র ক্রায়োভলক্যানো আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে।
বরফের ভলক্যানোতে পাথরের বদলে পানি, এমোনিয়া ও মিথেনের মিশ্রনে তৈরি তরল বের হয়।এই ধরণের ভলক্যানোর নাম ক্রায়োভলক্যানো। এই ধরণের ভলক্যানো সৌরজগতের সবচেয়ে অদ্ভুত জিনিসপত্রের মাঝে অন্যতম। কিন্তু এখন একটি আরও অদ্ভুত বিষয় দেখা গেছে।
শিল্পীর কল্পনায় আহুনা মনস। |
কিছুদিন আগে সেরেস নামে একটি ড্রফট প্ল্যানেট যেটি মঙ্গল ও বৃহস্পতির মধ্যবর্তী যে এস্টরয়েড বেল্ট আছে সেখানে অবস্থিত, সেখানে এরকম একটি ক্রায়োভলক্যানো আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা। সৌরজগতের অনেক জায়গাতে এরকম একাধিক ক্রায়োভলক্যানো আছে, কিন্তু সেরেসে একটিই ক্রায়োভলক্যানো পাওয়া গেছে এখন পর্যন্ত। বিজ্ঞানীরা এর নাম দেন আহুনা মনস, যার উচ্চতা প্রায় ২.৫ মাইল। " চিন্তা করুন যদি পৃথিবীতে একটি মাত্র আগ্নেয়গিরি থাকত, তাহলে সেটি সত্যিই অবাক হবার মত বিষয় হত।" বলেন ইউনিভার্সিটি অব আরিজোনা'র মাইকেল সরি। গত সপ্তাহে মাইকেল সরি ও তার দল একটি গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেন।
কিছুদিন আগের পর্যবেক্ষণে আর এই ক্রায়োভলক্যানোটি আস্তে আস্তে ক্ষয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেন? "আমরা মনে করি সেরেসে আরও অনেকে ক্রায়োভলক্যানো ছিল।হয়ত সময়ের সাথে সাথে এগুলো বিলীন হয়ে যায় সেখানে।" বলেন মাইকেল সরি। গত সপ্তাহে মাইকেল সরি ও তার দল এ বিষয়ে একটি গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেন। গত কয়েক মিলিয়ন বছর ধরে সেরেসে এরকম অসংখ্য ক্রায়োভলক্যানো তৈরি হয়েছে ও নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। পৃথিবীতে একটি পাহাড় যে কারণে ধীরে ধীরে বিলীন হতে পারে যেমন বাতাস, পানি এসব সেরেসে নেই এমন কি সেখানে কোনও বায়ুমণ্ডলও নেই। যে কারণে সেরেসে ক্রায়োভলক্যানো নিশ্চিহ্ন হতে পারে সেই পদ্ধতির নাম "ভিসকাস রিলাক্সেশন।" এতে যথেষ্ট সময় পেলে প্রত্যেক কঠিন পদার্থই প্রবাহিত হতে চায়। পৃথিবীতে গ্লেসিয়ারের চলাচল এ কারনেই সম্ভব হয়। মাইকেল সরি বলেন " আহুনা মনস'র বয়স প্রায় ২০০ মিলিয়ন বছর।
কলোরাডো'র সাউথওয়েস্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের কেলসি সিঙ্গার যিনি এই গবেষণার সাথে জড়িত ছিলেন না, তিনি বলেন এই তত্ত্ব খুবই আকর্ষণীয় ব্যাপার হবে যদি সেরেসের পুরাতন ক্রায়োভলক্যানোগুলিও এটা সমর্থন করে। সিঙ্গার বলেন "যেহেতু প্রতিটি ক্রায়োভলক্যানো আলাদা ধরণের, এই রহস্য উদঘাটন করা গেলে পরবর্তী রহস্য সমাধানের জন্য আরও একটি সুত্র জমা হবে।"
No comments