আকাশ দেখাঃ পর্ব-১। মহাকাশের পরিচিতি।
সাব এটমিক পারটিকেল থেকে শুরু করে বৃহত্তম গ্যালাক্সী পর্যন্ত যা কিছুই আছে সবই মহাকাশের অন্তর্ভুক্ত। অনেকেই মনে করেন পৃথিবী মহাকাশের বাইরে। এটা খুবই ভুল ধারণা। পৃথিবী মহাকাশের খুবই নগণ্য একটি জ্যোতিষ্ক। মহাকশের সম্পূর্ণ আয়তন কত তা সম্পর্কে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরের জ্যোতিষ্কের দূরত্ব প্রায় ১৩.২ বিলিয়ন আলোকবর্ষ। যদি মহাকাশকে একটি গোলাকার বস্তু ধরা হয় তবে এর ব্যাসার্ধ নিশ্চিতভাবেই ১৩.২ বিলিয়ন আলোকবর্ষেরও বেশী।
মহকাশের সৃষ্টি সম্পর্কে বর্তমানে সবচেয়ে সমাদৃত তত্ত্ব হল "বিগ ব্যাং থিওরী।" এই তত্ত্ব অনুসারে মহাকশের সৃষ্টি একটি মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে। এ মহাবিস্ফোরণ বিগ ব্যাং নামে পরিচিত। বিগ ব্যাং ঘটেছিল একটি অসীম ঘনত্বসম্পন্ন, অসীম তাপমাত্রার, এবং অসীম ক্ষুদ্র আয়তনের একটি বস্তুতে। মহাবিস্ফোরণের সময়কাল ছিল ১০ ^ -৪৩ সেকেন্ড। মানে এক সেকেন্ডকে যদি ১'র পর ৪৩টি শূন্য বসিয়ে যে সংখ্যা হয় তা দিয়ে ভাগ করা হয় তবে যে ভাগফল আসবে তত সেকেন্ড। এই সময়কাল কে বলা হয় প্ল্যাঙ্ক ইপোক বা প্ল্যাঙ্ক এরা। এ সময় তাপমাত্রা ছিল প্রায় ১০ ^ ৩২ কেলভিন। প্রথম সেকেন্ডের ভেতরেই তাপমাত্রা প্রায় ১০ বিলিয়ন ডিগ্রী সেলসিয়াসের নীচে নেমে আসে। এই তাপমাত্রা দরকার ছিল প্রোটন ও নিউট্রন তৈরি হবার জন্য। দুই মিনিটেরও কম সময়ের মাঝে হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের কেন্দ্র তৈরি হয়। এরপর প্রায় ৩,০০,০০০ বছর লেগে যায় একটি ইলেকট্রন ধরে হাইড্রোজেন পরমাণুর কেন্দ্রের হাইড্রোজেন পরমাণুতে পরিণত হতে।
মহাকাশের প্রথম নক্ষত্রের জন্ম হয় বিগ ব্যাং এর প্রায় এক বিলিয়ন বছর পর। আমাদের সৌরজগৎ মহাকাশের খুবই নতুন সদস্য। বিগ ব্যাং এর প্রায় আট বিলিয়ন বছর পর সূর্যের সৃষ্টি হয়। এই সূর্যের তৃতীয় গ্রহ পৃথিবীতে আমাদের নিবাস। এটা ছাড়া এই বিশাল মহাকাশে আমাদের প্রানীদের বসবাসের জন্য উপযুক্ত একটিও জায়গা আবিষ্কার হয়নি এখন পর্যন্ত। সৌরজগৎ নিজে একটি গ্যালাক্সীর অন্তর্ভুক্ত যার নাম মিল্কিওয়ে। মিল্কিওয়ে আবার একটি গ্যালাকটিক লোকাল গ্রুপের সদস্য। এই লোকাল গ্রুপ অব গ্যালাক্সী একটি সুপারক্লাস্টারের সদস্য যার নাম ভারগো সুপারক্লাস্টার। ভারগো সুপারক্লাস্টার ল্যানিয়াকিয়া নামে একটি আরও বড় বস্তুর সদস্য।
আধুনিক টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে মহাকাশে বিলিয়ন বিলিয়ন গ্যালাক্সী আছে। একেকটি গ্যালাক্সীতে আছে অগণিত নক্ষত্র, গ্রহ, গ্রহাণু , উপগ্রহ ও ধুমকেতু।
আমাদের ফেসবুক পেইজে চোখ রাখুন আরও ব্যাখ্যার জন্য।
মহাবিস্ফোরণের সময়কাল এখনও সঠিক ভাবে নিরূপিত হয়নি। কোন একটি লেখায় দেখেছি ১০^৩৫সেকেন্ড। আমার এক প্রফেসর বন্ধুর প্রেডিকশন ১০^২০সেকেন্ড।
ReplyDeleteতৌকির আহমদেকে অনেক ধন্যবাদ এরকম একটি জটিল বিষয় বাংলাভাষায় রূপান্তর করার জন্য।
ল্যানিয়াকিয়া আর ভার্গো নিয়ে সন্দিহান ছিলাম। কারন দুইটাই সুপারক্লাস্টার হিসেবে সব যায়গায় বলা হয়। এখন পরিষ্কার হলাম
ReplyDeleteThis comment has been removed by the author.
ReplyDelete