Header Ads

  • সর্বশেষ

    বৃহস্পতির গ্রেট রেড স্পট।THE GREAT RED SPOT OF JUPITER.

    গ্রেট রেড স্পট হল বৃহস্পতি গ্রহের একটি স্থায়ী উচ্চ চাপের জায়গা যেখানে প্রতিনিয়ত সাইক্লোন ধরণের গতির বায়ু চলমান। এর অবস্থান বৃহস্পতির বিষুবরেখার বাইশ ডিগ্রী দক্ষিণে। ১৮৩০ সালের পর থেকে টানা ১৮৭ বছর এটাকে একই জায়গাতে দেখা গেছে। যদি সত্য হয়ে থাকে ১৬৬৫ থেকে ১৭১৩ সালের মধ্যকার পর্যবেক্ষণেও এই ঝড়টাকেই দেখা গেছে। তবে এই ধরণের স্থায়ী ঝড় সৌরজগতের গ্যাস জায়ান্টদের মাঝে এটাই একমাত্র নয়।


    গ্রেট রেড স্পটের অস্তিত্ব হয়ত ১৬৬৫ সালের আগেও ছিল কিন্তু বর্তমানে যেটা দেখা যায় সেটা প্রথম দেখা হয় ১৮৩০ সালে এবং ১৮৭৯ সালে এটা নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে গবেষণা শুরু হয়। সপ্তদশ শতাব্দী থেকে ১৮৩০ সালের মাঝের এই সময়ে কোন গবেষণা না হওয়াতে ঐ সময়ের মাজের কোন তথ্য জানা যায়নি। এটা সর্ব প্রথম দেখতে পাবার সম্মান দেয়া হয় রবার্ট হুক কে।তিনি এটি প্রথম দেখেন ১৬৬৪ সালের মে মাসে। যদিও ধরা হয় যে রবার্ট হুক যেটি দেখেছিলেন সেটি ছিল উত্তর গোলার্ধে, কিন্তু গ্রেট রেড স্পট দক্ষিণ গোলার্ধে। পরের বছর এমনই একটি স্পট দেখার কথা বর্ণনা করেন জিওভান্নি ক্যাসিনি। তিনি নাম দেন পারমানেন্ট স্পট। ক্যাসিনির পারমানেন্ট স্পত পর্যবেক্ষণের সময়কাল পাওয়া যায় ১৬৬৫ থেকে ১৭১৩ সাল পর্যন্ত। পরের ১১৮ বছর কোন পর্যবেক্ষণ না থাকায় এই দুটি স্পট একই কিনা তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়না।ব্যাপারটি আরও রহস্যময় হয়ে ওঠে যখন ১৭১১ সালে ডোনাটো ক্রেটি ভ্যাটিকানে একটি চিত্র প্রদর্শন করেন যাতে এই স্পটটি দেখানো হয়। এই ছবিতেই প্রথম এই স্পটটিকে লাল দেখানো হয়।

    পৃথিবীর সাথে একটি তুলনামূলক চিত্র। ছবিঃ মাইকেল ক্যারল।
    ফেব্রুয়ারী ২৫, ১৯৭৯ সালে যখন ভয়েজার ১ স্পেসক্র্যাফট বৃহস্পতি থেকে মাত্র ৯.২ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল, তখন প্রথম এই স্পটের বিস্তারিত ফটোগ্রাফ নেয়া হয়। যেসব মেঘের দৈর্ঘ্য অন্তত ১৬০ কিমি ছিল সেগুলোও সেসব ছবিতে স্পস্ট বোঝা যায়। তখনই প্রথমবারের মত নিশ্চিত হওয়া যায় যে এটি একটি ঝড়। ২০০৪ সালের শুরুর দিকে দেখা যায় যে এর দৈর্ঘ্য কমছে, যেখানে প্রায় ১০০ বছর আগে এর দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৪০০০০ কিমি। এই হারে কমতে থাকলে ২০৪০ সাল নাগাদ এটি সম্পূর্ণ বৃত্তাকার আকৃতি পাবার কথা। আশেপাশের জেট স্ট্রীমের জন্য এমনটি অবশ্য নাও হতে পারে। এটা এখনও জানা যায়নি এই স্পটটি আর কতদিন টিকবে। এমনও হতে পারে যে এই পরিবর্তন স্পটটির জন্য বেশ স্বাভাবিক।


    ডিমের মত আকৃতির এই গ্রেড রেড স্পট ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘোরে। একবার পূর্ণ পাক দিকে পৃথিবীর ছয়দিন সময় লাগে। এটি গ্রহটির পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রায় ৪০,০০০ কিমি এবং দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে প্রায় ১৪,০০০ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত। পৃথিবীর আকারের দুই-তিন টা গ্রহ অনায়াসেই এর মাঝে হারিয়ে যাবে। স্পটের জায়গাটি বৃহস্পতির স্বাভাবিক মেঘের পৃষ্ঠ থেকে প্রায় আট কিমি উঁচু। ইনফ্রারেড এনালিসিসে দেখা যায় যে গ্রহের অন্যান্য মেঘের চেয়ে এই স্পটের মেঘ বেশ ঠান্ডা, হয়ত উচ্চতার কারণে। স্পটের বাইরের দিকে বাতাসের গতি ঘন্টায় প্রায় ৪৩০ কিমি। 

    এটা এখনও অজানা কেন এই স্পটের রং লাল। তবে বিজ্ঞানীদের ধারণা এটা হয়ত জটিল কিছু জৈব যৌগের অণু, লাল ফসফরাস বা কোন সালফারের যৌগের জন্য হয়েছে।

    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad