Header Ads

  • সর্বশেষ

    প্ল্যানেটারী সায়েন্স মহাকাশে প্রাণের সম্ভাব্যতায় কিভাবে সাহায্য করছে?

    প্ল্যানেটারী সায়েন্সেস এ গ্রহ সম্পর্কে প্রায় সবকিছুই আলোচনা করা হয়। গ্রহ তো আছেই, সাথে গ্রহগুলিকে যেসব উপগ্রহ প্রদক্ষিণ করছে তাদেরকে নিয়েও গবেষণা হয়। কিভাবে গ্রহ বা তাদের উপগ্রহ, ধুমকেতু ও এস্টরয়েড কিভাবে সৃষ্টি হয় এসব নিয়েও গবেষণা ও আলোচনা হয়। প্ল্যানেটারী সায়েন্স বিভিন্নভাবে মহাকাশে প্রাণ খুঁজে পাবার প্রচেষ্টাকে সাহায্য করে। তাদের মাঝে দুটি ব্যাপার নিয়ে এখন আলোচনা করা হচ্ছে।

    প্রথম কারনঃ কিভাবে গ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে এটা জানতে পারলে আমরা বুঝতে পারব মহাকাশে গ্রহের সৃষ্টি কতটা স্বাভাবিক ঘটনা। যদি গ্রহ সৃষ্টি খুব স্বাভাবিক ব্যপার হয় তবে প্রাণের সৃষ্টিও স্বাভাবিক হবার সম্ভবনা প্রবল। যদি গত শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত মহাকাশ গবেষণার অগ্রগতি দেখা হয়, তবে দেখ ঐ সময়কার প্রচলিত ধারণা অনুসারে ঐ সময়ের গবেষকেরা সূর্য ছাড়া অন্য কোনও নক্ষত্রের গ্রহ আছে ব্যাপারটা চিন্তাও করতে পারতেন না। হয়ত কেউ কেউ চিন্তা করতেন, কিন্তু প্রমাণ করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত ছিলনা। কিন্তু গত শতাব্দীরই শেষের অর্ধেকে আমরা জানতে পেরেছি কিভাবে আমাদের সৌরজগতের গ্রহগুলির সৃষ্টি হয়েছে। এই জানতে পারার ভিত্তি ছিল চাঁদে ও বিভিন্ন গ্রহে পাঠানো অসংখ্য অভিযানে পাওয়া অসংখ্য তথ্য উপাত্ত। ধীরে ধীরে আমাদের মাঝে ধারণা এসেছে যদি সূর্য একটি নক্ষত্র হয় এবং এর যদি গ্রহ থাকতে পারে, তবে নিশ্চয়ই অন্য নক্ষত্রেরও গ্রহ আছে। কে জানে সেখানে হয়ত প্রাণও আছে।

    ১৯৯৫ সাল পর্যন্তও পৃথিবীর কারও কাছে প্রমাণ ছিলনা যে অন্য নক্ষত্রের গ্রহ আছে। ঐ বছরই সর্বপ্রথম আমাদের সৌরজগতের বাইরে গ্রহ আবিষ্কার হয়। আমরা এ ধরণের গ্রহের নাম দেই “এক্সট্রাসোলার প্ল্যানেটস” বা “এক্সোপ্ল্যানেটস”। তারপর থেকে এত বেশী এক্সোপ্ল্যানেট খুঁজে পাওয়া গেছে যে এমনও নক্ষত্র পাওয়া গেছে যার গ্রহের সংখ্যা আমাদের সূর্যের চেয়ে বেশী। এই তথ্য থেকে বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে মহাকাশের বেশীরভাগ নক্ষত্রেরই গ্রহ আছে এবং না থাকাটাই অস্বাভাবিক। এসব গ্রহের নিজস্ব উপগ্রহও হয়ত আছে যা এখনও প্রমাণিত হয়নি। আর এইসব গ্রহ ও উপগ্রহে কোন সভ্যতার উপস্থিতির ব্যাপারটা উড়িয়ে দেয়া যায়না।


    দ্বিতীয় কারনঃ প্ল্যানেটারী সায়েন্স আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করছে কিভাবে এইসব গ্রহ তাঁর নক্ষত্রের চারপাশে ঘুরছে, কিভাবে উপগ্রহ তাঁর গ্রহকে প্রদক্ষিণ করছে। এই সব গ্রহ-উপগ্রহ কি কি পদার্থ দিয়ে তৈরি। যেমন একটি গ্রহ সম্পর্কে জানার পর আমরা তাঁর সাথে অন্য একটি জানা গ্রহের সাথে তুলনা করতে পারি। যেমন কিছু গ্রহ আছে যেগুলি পৃথিবীর মত পাথুরে, বৃহস্পতি বিপুল পরিমাণ হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাসের তৈরি। প্ল্যানেটারী সায়েন্সের গবেষণায়ই আমার জেনেছি যে শুক্র গ্রহ পৃথিবীর চেয়ে অনেক উষ্ণ। এই বিষয়ের কল্যানেই আমরা জানতে পেরেছি যে পৃথিবী ও চাঁদ সূর্য থেকে প্রায় একই দুরত্বে থাকলেও চাঁদ প্রাণহীন মরুভূমি আর পৃথিবী প্রাণে পরিপূর্ণ। আমরা জানি মঙ্গল কেন পৃথিবীর চেয়ে এত ঠান্ডা ও শুষ্ক।

    গ্রহ কিভাবে কাজ করে জানার ফলে আমরা দৃষ্টি দিতে পেরেছি একই নক্ষত্রের অনেকগুলি গ্রহ একসাথে কিভাবে অবস্থান করে। সবচেয়ে বড় কথা এই সব জ্ঞানের কারণে আমরা আজ “বাসযোগ্য গ্রহ- যেখানে জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সব মৌলিক উপাদান আছে” আলাদা করতে পারি। কিন্তু বাসযোগ্য গ্রহ মানে এই নয় যে তাতে গাছপালা, পশুপাখি বা মানুষ বেঁচে থাকতে পারবে। পৃথিবীর ইতিহাস দেখলে বোঝা যায় শুরুর দিকের প্রায় সব প্রানীই ছিল আণুবীক্ষণিক। এমনকি বর্তমান সময়েও পৃথিবীতে যে পরিমাণ মাইক্রোবস আছে তাদের সম্পূর্ণ ভর সমস্ত উদ্ভিদ ও প্রাণীদের একত্রিত ভরের চেয়েও বেশী। পৃথিবীর বাইরে প্রাণ খোঁজার অর্থ হল মূলতঃ সে সব গ্রহ খোঁজা যেখানে এই সব মাইক্রোবস জাতীয় প্রাণ টিকে থাকতে পারবে। যদি পারে তবে আরও বড় প্রানীর সেখানে বেঁচে থাকতে পারা বা খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী হতেই পারি।      

    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad