Header Ads

  • সর্বশেষ

    নেপচুনের ভেতরটা কি দিয়ে তৈরি?

    নেপচুনের ভর হল ১.০২৪৩ x ১০^২৬ কেজি। এটি পৃথিবীর চেয়ে ১৭ গুণ ভারী কিন্তু বৃহস্পতির চেয়ে ১৯ ভাগ হালকা। এর অভিকর্ষজ ত্বরণ হল ১১.১৫ মিটার পার সেকেন্ড স্কয়ার, যা পৃথিবীর চেয়ে ১.১৪ গুণ বেশী। এর চেয়ে বেশী অভিকর্ষজ ত্বরণ শুধু বৃহস্পতির। নেপচুনের অক্ষীয় ব্যাসার্ধ হল ২৪,৭৬৪ কিলোমিটার যা পৃথিবীর পারায় চার গুণ। ইউরেনাসের মত নেপচুনও একটি আইস জায়ান্ট।

    নেপচুনের আভ্যন্তরীন গঠন অনেকটা ইউরেনাসের মত। এর বায়ুমন্ডল এর ভরের ৫%-১০% যা হয়ত কেন্দ্রের কাছাকাছি ১০% থেকে ২০% পর্যন্তও হতে পারে। সেখানে বায়ুমণ্ডলের চাপ হতে পারে ১০ গিগাপ্যাস্কেল যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের চাপের চেয়ে প্রায় ১০০,০০০ গুণ বেশী। বায়ুমণ্ডলের নীচের দিকে মিথেন গ্যাস, এমোনিয়া গ্যাস ও পানির ঘনত্ব ধীরে ধীরে বেড়েছে।


    নেপচুনের ম্যান্টলের ভর পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ১০ থেকে ১৫ গুণ বেশী। কেন্দ্রের ঠিক উপরের জায়গাটা হল ম্যান্টল। এ জায়গাটা মূলতঃ পানি, এমোনিয়া ও মিথেন দিয়ে তৈরি। প্ল্যানেটারী সায়েন্সের রীতি অনুসারে এই মিশ্রণকে বরফের মিশ্রণ বা “আইসি” বলা হয় তা সে যতই উত্তপ্ত বা প্রবাহমান ঘন তরল যাই হোক না কেন। এই ধরণের ঘন তরল বিপুল পরিমানে তড়িৎ প্রবাহ করতে পারে। মাঝে মাঝে একে বলা হয় পানি ও এমোনিয়ার তৈরি মহাসাগর। গ্রহটির ম্যান্টলে প্রচন্ড চাপে পানি আয়নিত হয়ে হাইড্রোজেন আয়ন ও অক্সিজেন আয়নে আলাদা হয়ে থাকতে পারে। এর নীচে পানি যেভাবে থাকতে পারে তা হল “সুপারসনিক ওয়াটার।“ পানি এই অবস্থায় গেলে অক্সিজেন কেলাসিত হয়ে যায় আর তার উপরে হাইড্রোজেন আয়নের প্রবাহ চলতে থাকে। গভীরতা যখন প্রায় ৭০০০ কিলোমিটার তখন প্রচন্ড চাপে মিথেন গ্যাস ভেঙে কার্বনে পরিণত হয়। উচ্চচাপের কারণে এই কার্বন হীরার কেলাসে পরিণত হয় এবং শিলাবৃষ্টির মত নীচের দিকে পড়তে থাকে। লরেন্স লিভারমুর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরীরে উচ্চচাপের পরীক্ষায় প্রমাণিত হয় যে ম্যান্টলে যে পরিমাণ চাপ তাতে সেখানে তরল কার্বনের মহাসাগর থাকতে পারে এবং সেই মহাসাগরে কঠিন হীরার খন্ড ভেসে বেড়াতে পারে।

    নেপচুনের কেন্দ্র বা কোর মূলতঃ লোহা, নিকেল ও বিভিন্ন ধরণের সিলিকেটস দিয়ে তৈরি। এই কোরের ভর পৃথিবীর কোরের চেয়ে প্রায় ১.২ গুণ ভারী। এই জায়গাতে চাপ হল প্রায় ৭০০ গিগাপ্যাস্কেল যা পৃথিবীর কোরের প্রায় দ্বিগুণ। নেপচুনের কোরের তাপমাত্রা প্রায় ৫,৪০০ কেলভিন।     

    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad