Header Ads

  • সর্বশেষ

    এন্টি-ম্যাটার কি?

    আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান মতে সাধারণ পদার্থ যেসব কণিকা দিয়ে গঠিত হয় এন্টিম্যাটার ঠিক উল্টো ধর্ম সম্বলিত পদার্থ দিয়ে গঠিত হয়। তত্ব মতে একটি সাধারণ পদার্থের মৌলিক কণাগুলির যা সম্মিলিত ভর, একটি এন্টিম্যাটারের কণাগুলির সম্মিলিত ভরও একই। সাধারণ পদার্থের কণাগুলিকে যদি একেকটি পার্টিকেল বলা হয় তবে এন্টিম্যাটারের মৌলিক কণাগুলি হবে এন্টি-পার্টিকেল। একটি পার্টিকেল ও এন্টি-পার্টিকেলেরও ভর কিন্তু সমান হবে কিন্তু তাদের মাঝে পার্থক্য থাকবে তাদের ইলেকট্রিক চার্জে। পার্টিকেল যদি পজিটিভ চার্জের হয় তবে এন্টি-পার্টিকেল হবে নেগেটিভ চার্জের। যেমন একটি প্রোটনের চার্জ হল পজিটিভ, কিন্তু এন্টি-প্রোটনের চার্জ নেগেটিভ।

    একটি পার্টিকেল আর একটি এন্টি-পার্টিকেলকে যদি সংঘর্ষ করানো হয় তবে তারা একে অপরকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে। সাথে তৈরি প্রচুর পরিমাণে হবে গামা রশ্মি, নিউট্রিনো এবং কিছু তুলনামূলক কম ভরের পার্টিকেল-এন্টিপার্টিকেল জোড়া। এই সংঘর্ষের ফলে পার্টিকেল-এন্টিপার্টিকেল নিশ্চিহ্ন হবার সাথে আরও তৈরি হবে শক্তি যা তাপ উৎপাদন অথবা অন্য কোনও কাজে ব্যাবহার করা যাবে। যে পরিমাণ শক্তি উতপন্ন হবে তা নির্ভর করবে পার্টিকেল-এন্টিপার্টিকেল বা ম্যাটার-এন্টিম্যাটার দুটিরই ভরের উপর। আর এই শক্তির হিসাব করা যাবে আলবার্ট আইনস্টেইনের বিখ্যাত ভর-শক্তির সমতা সুত্র বা E=mc2 দিয়ে।

    সাধারণ পদার্থ বা ম্যাটারের পার্টিকেলগুলি যেমন একটি আরেকটির সাথে যুক্ত হয়ে ম্যাটার তৈরি করে, ঠিক তেমনি এন্টিম্যাটার পার্টিকেল গুলি নিজেদের সাথে যুক্ত হয়ে এন্টিম্যাটার তৈরি করে। যেমন একটি পজিট্রন (ইলেক্ট্রনের এন্টি-পার্টিকেল) এবং একটি এন্টি-প্রোটন (প্রোটনের এন্টি-পার্টিকেল) যুক্ত হয়ে একটি এন্টি-হাইড্রোজেনের পরমাণু তৈরি করে। এরকম জটিল এন্টি-এলিমেন্ট বা এন্টি-মৌলিক পদার্থ যে তৈরি হতে পারে তার প্রমাণও আছে।

    আমাদের দৃশ্যমান মহাকাশের বেশীরভাগ বস্তুই সাধারণ পদার্থ দিয়ে তৈরি। যখন বিগব্যাং সংগঠিত হয় অর্থাৎ সৃষ্টির শুরুতে কিন্তু ম্যাটার এবং এন্টিম্যাটারের পরিমাণ সমান ছিল। এই অসমতা কেন তৈরি হল তা আজও পদার্থবিজ্ঞানের একটি অমীমাংসিত রহস্য। এই যে ম্যাটার এবং এন্টিম্যাটারের পরিমাণের যে অসমতা তৈরি হয়েছে এই ব্যাপারটিকে বলা হয় ব্যারিওজেনেসিস।


    এন্টি-এটম বা এন্টি-পরমাণু হিসেবে এন্টিম্যাটার উৎপাদন করা পৃথিবীর অন্যতম কঠিন কাজ। কিছু কিছু তেজস্ক্রিয়  বিক্রিয়া এবং পার্টিকেল এক্সিলারেটরে কিছু কিছু মৌলিক এন্টি-পার্টিকেল তৈরি করা যায়। এন্টিহিলিয়াম পরমাণুও তৈরি করা গেছে, কিন্তু অনেক পরীক্ষানিরীক্ষা ও গবেষণার পরে। 

    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad