Header Ads

  • সর্বশেষ

    মহাকাশ জ্বর।

    নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে যে যেসব এস্ট্রোনটেরা দীর্ঘ মিশনে যান তারা “মহাকাশ জ্বর” এ ভুগতে পারেন এমন ঝুঁকি আছে। কম গ্র্যাভিটির কারনে যে ওজনহীনতা দেখা যায় তার জন্য মানুষের শরীরের তাপমাত্রা কমপক্ষে এক ডিগ্রী সেলসিয়াস বেড়ে যেতে পারে। এই ধরণের পরিবর্তন ধীরে ধীরে অন্ততঃ দুই থেকে আড়াই মাস পরে নজরে আসে।

    শরীরের তাপমাত্রার খুব সামান্য পরিবর্তনের জন্য নানা ধরণের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই গবেষণার ফলাফলের পর বিজ্ঞানীরা মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর মিশনে এস্ট্রোনটদের শরীরে সুস্থতার ব্যাপারে ঝুঁকি অনুমান করছেন। “সায়েন্টিফিক রিপোর্ট” জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রটি এখানে পাবেন। এই স্পেস ফিভার বা মহাকাশ জ্বর ভবিষ্যতের যেকোনো মনুষ্যবাহী মিশনের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে সেই সাথে মানুষের যে পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেবার যে সক্ষমতা, সেটাতেও প্রভাব পড়তে পারে।

    আমাদের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকে। এই তাপমাত্রা ঘাম ও কাঁপুনির মত উপসর্গ দিয়ে খুবই কম মাত্রার সীমার মাঝে নিয়ন্ত্রিত হয়। আর এই তাপমাত্রার পরিবর্তন যদি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হয় তবে তাতে মৃত্যুরও ঝুঁকি থাকে।

    গবেষকেরা মহাকাশ জ্বরের ব্যাপারে নিশ্চিত হন ১১ জন এস্ট্রোনটের উপর পর্যবেক্ষণের পর। তাদের এই পর্যবেক্ষণ শুরু হয় মিশনের শুরু আগে। এই পর্যবেক্ষণ ইন্টারন্যাশনাল স্পেস সেন্টারে থাকাকালীন সময় চলতে থাকে এবং সেখান থেকে ফেরত আসার পরও ঐ সব এস্ট্রোনটদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। এই পর্যবেক্ষণে  ব্যায়াম করার সময় ও বিশ্রামের সময় এস্ট্রোনটদের শরীরের তাপমাত্রা লিপিবদ্ধ করা হয়। মহাকাশে প্রায় জিরো গ্র্যাভিটিতে এস্ট্রোনটদের শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে ব্যায়াম একটি খুবই জরুরী কাজ। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে ব্যায়ামের সময় এস্ট্রোনটদের শরীরের তাপমাত্রা মাঝে মাঝেই ৪০ ডিগ্রীর সেলসিয়াসের উপরে উঠে যাচ্ছে। তাপমাত্রার এই পরিবর্তন অনেক ক্ষেত্রেই জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এই তাপমাত্রার বৃদ্ধির হার পৃথিবীতে বৃদ্ধির চেয়ে তুলনামূলক বেশী। এমনকি বিশ্রাম নেবার সময়ও শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় এক ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশী থাকে।

    “ওজনহীন পরিবেশে অতিরিক্ত তাপ হারানো আমাদের শরীরের জন্য খুবই কঠিন ব্যাপার। কারণ এই পরিবেশে মানুষের শরীর থেকে পরিবেশের ভেতর তাপের বিনিময় হতে পারে না।“ বলেন হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান গুঙ্গা। তিনি বার্লিন ভিত্তিক ইউনিভার্সিটি ক্লিনিক “ক্যারিটে” এর একজন ওষুধ বিশেষজ্ঞ। এই ক্লিনিকটিই এই গবেষণা পরিচালনা করেছে।

    মানুষ যদি কম গ্র্যাভিটিতে ঘামে, তবে সেই ঘাম শুকাতে স্বাভাবিকের চেয়ে তুলনামূলক দেরী হয়। এতে মানুষের স্বাভাবিকভাবে ঘামার ক্ষমতা কমতে থাকে। এভাবে ঘাম শুকাতে যত দেরীর পরিমাণ বাড়তে থাকে মহাকাশ জ্বরের ঝুঁকির মাত্রাও বাড়তে থাকে। আর এই অক্ষমতা ব্যায়াম করার সময় বেশী দেখা যায়। গবেষকেরা বলেন “এই জন্যই হয়ত এস্ট্রোনটেরা তাপমাত্রার তারতম্য নিয়ে অভিযোগ করতেন।“ তারা এও বলেছেন যে ইনফেকশনের সময় আমাদের ইমিউন সিস্টেম যে প্রো-ইনফ্লেমটরী রেসপন্স দেখায় একই ধরণের রেসপন্স স্পেস ফ্লাইটের সময়ও দেখা যায়।

    এই গবেষণার সময় সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তি ব্যাবহার করা হয় যার মাঝে ছিল কপালে সেন্সর ব্যবহার যেতে একটি চামড়ার তাপমাত্রা নিতে পারে এমন একটা সেন্সর ছিল আর সেই সাথে ছিল হিট-ফ্লাক্স সেন্সর। এটা দিয়ে রক্তের তাপমাত্রার সামান্যতম পরিবর্তনও পরিমাপ করা যায়। 

    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad